হ্যাঁরে মা ! শুনলাম আমাকে বড়ো খোকা নিজের কাছে নিয়ে যাবে আর তোর বাবাকে ছোট খোকা !
তুই তো জানিস তোর বাবার পায়ে তেল মালিশ না করলে তাঁর রাতে ঘুম হয় না। ছোট বউমা কি পারবে রাত জেগে তেল মালিশ করতে ? কথা গুলি বলছেন সালেহা বেগম তাদের একমাত্র মেয়ে সাবিহাকে। বেশ কয়েক দিন ধরে দুই ছেলে দুজনকে সাথে নিয়ে যেতে চাইছে । তাদের একজনের দুজনকে রাখা সম্ভব না। তাই দুজন থাকবে দুই ছেলের কাছে ।
তুই তো জানিস তোর বাবার পায়ে তেল মালিশ না করলে তাঁর রাতে ঘুম হয় না। ছোট বউমা কি পারবে রাত জেগে তেল মালিশ করতে ? কথা গুলি বলছেন সালেহা বেগম তাদের একমাত্র মেয়ে সাবিহাকে। বেশ কয়েক দিন ধরে দুই ছেলে দুজনকে সাথে নিয়ে যেতে চাইছে । তাদের একজনের দুজনকে রাখা সম্ভব না। তাই দুজন থাকবে দুই ছেলের কাছে ।
সাবিহার চোখ দুটি
মায়ের কথা শুনে ছলছল করে উঠলো। তাদের বাবা রহমান সাহেব একজন সরকারি
চাকরিজিবি ছিলেন। পনেরো বছর হয়েছে রিটায়ার্ড করেছেন । রিটায়ার্ডের সময়
যে টাকা গুলি পেয়েছিলেন দুই ছেলে আর মেয়ে কে উচ্চ শিক্ষিত করেছেন ।
নিজেদের থাকার জন্য উপরে ছাঁদ দিয়ে এক তলা বিল্ডিং বানিয়েছেন । কিছু টাকা
দিয়ে মেয়ের ভাল ঘরে বিয়ে দিয়েছেন ।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ শূন্য হাত। কিন্তু রহমান সাহেবের এতে কোনও দুঃখ নেই। কারণ তিনি ছেলে মেয়েদের সুশিক্ষিত করেছেন ।দুই ছেলে ভাল ঘরের মেয়ে বিয়ে করেছে । বিয়ে করেই ছেলেরা যে যার শ্বশুর বাড়ি থেকে দেওয়া বাড়িতে থাকে ।মেয়ে থাকে শ্বশুর বাড়িতে । বৃদ্ধ বয়সে দুজন একদম একা। মাঝে মাঝে ফোনে টুকটাক কথা বলে বাবা মায়ের সাথে ।
,
দুই ছেলে কিছুদিন আগে জানিয়েছে তারা দুজন বাবা মা কে ভাগ করে নিজেদের কাছে রাখবে ।
,
রহমান সাহেব সকাল থেকে চুপচাপ বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছেন । সালেহা বেগম আলাদা আলাদা ব্যাগে নিজেদের কাপড় গুছিয়ে রাখছেন । এমন সময় বড়ো ছেলে আর বউ এলেন ।এসে বললো মা তুমি রেডি আমার হাতে সময় নেই তাড়াতাড়ি চলো। সালেহা বেগমের চোখ ছলছল করছে বুক ফেটে যাচ্ছে কষ্টে।
,
একটু পর ছোট ছেলে বউ নিয়ে আসলো বললো বাবা তুমি এখনও বসে আছো আমার অফিসে একটা জরুরি মিটিং আছে তাড়াতাড়ি রেডি হও। রহমান সাহেব এবার হাতের পেপার টা রাখলেন চোখ থেকে চশমা খুলে টেবিলের উপরে রেখে বললেন আমি জানি তোরা অনেক বড়ো বিজনেস ম্যান । দশটা মিনিট আমার জন্য এখন তোদের দিতে হবে । এখানে বস আমি তোদের একটা গল্প বলবো,দুই ভাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে ।আর ভাবছে বাবা কি পাগল হয়ে গেল আমরা কতো বিজি এখন কি গল্প শোনার সময় ।
দুই ভাই পাশে বসলো। যার যার বউ তাদের কাছেই দাঁড়িয়ে আছে । এবার রহমান সাহেব বললেন ,
আমি যখন চাকরি করতাম বেতন ছিল খুব অল্প । সারা মাস চলতে হিমসিম খেতে হতো। শেষে হাত একদম খালি হয়ে যেতো। তোদের বয়স তখন আট আর ছয়। একদিন অফিস থেকে বাসায় আসতেই দেখি তোরা মুখ ফুলিয়ে বসে আছিস। তোদের মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম তোদের সাইকেল দরকার । সে দিন তোদের আমি কিছু বললাম না। পরের দিন বাজারে গিয়ে একই রকম দুইটা সাইকেল এনে তোদের হাতে দিলাম । তোদের সে কি আনন্দ ।
তোর মা তখন বলেছিল , মাসের শেষ কোথায় পেলে টাকা । আমি হেসে দিয়ে বলেছিলাম আল্লাহ যোগাড় করে দিয়েছে । তোর মা আবার বললো তুমি একটা না হয় এখন আরেক টা পরে কিনতে ।
আমি তখন কি বলেছিলাম জানিস ? বলেছিলাম সবার একটা কলিজা থাকে কিন্তু আমার তিন টা সন্তানই তিন টা কলিজা । আমি চাই দুজন এক সাথে খুশি থাকুক ।
এই বৃদ্ধ বয়সে আমাদের পৃথক করে রাখবি! আচ্ছা বড়ো খোকা ছোট খোকা একটা উওর দে তো ?
আমার তো দুইটা ছেলে দুজনের কাছে ভাগ করে থাকবো কিন্তু তোদের কি হবে ? তোদের তো একটা সন্তান তখন পারবি দুজন বৃদ্ধ বয়সে দুই সন্তানের কাছে থাকতে ?
আমাদের নিয়ে তোদের ভাবতে হবে না। কাল দুইটা টিউশনি ঠিক করে রেখে এসেছি আর বাড়ি ভাড়া যা পাবো চলে যাবে আমাদের । এই শেষ বয়সে এই বুড়োবুড়ি এতো ধকল সইতে পারবে না। যদি কখনও তোদের মনে চায় এসে দেখে যাস।
রহমান সাহেবের এমন কথা শুনে সারা ঘরে নিস্তব্ধ বয়ে গেল । দুরে দাঁড়িয়ে সালেহা বেগম কাঁদছেন । দুই ছেলের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে গরম অশ্রু ।যেটা বাবার পা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে । হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বাবার পা জড়িয়ে ধরে বললো আমাদের মাফ করে দাও। অনেক বড়ো ভুল করেছি। এখন থেকে আমরা ও এখানে থাকবো বাবা । কলিজা ছাড়া কোনও বাবা মা ভাল থাকতে পারে না।
রহমান সাহেব দুই সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন । অনেক দিন পর সন্তানদের এভাবে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরতে মনটা ঠান্ডা হয়ে গেল । আর কোনও দুঃখ নেই। এই শান্তি টুকু আগামী দিন গুলি খুব ভাল ভাবে বেঁচে থাকতে দেবে বৃদ্ধ বাবা মা কে।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ শূন্য হাত। কিন্তু রহমান সাহেবের এতে কোনও দুঃখ নেই। কারণ তিনি ছেলে মেয়েদের সুশিক্ষিত করেছেন ।দুই ছেলে ভাল ঘরের মেয়ে বিয়ে করেছে । বিয়ে করেই ছেলেরা যে যার শ্বশুর বাড়ি থেকে দেওয়া বাড়িতে থাকে ।মেয়ে থাকে শ্বশুর বাড়িতে । বৃদ্ধ বয়সে দুজন একদম একা। মাঝে মাঝে ফোনে টুকটাক কথা বলে বাবা মায়ের সাথে ।
,
দুই ছেলে কিছুদিন আগে জানিয়েছে তারা দুজন বাবা মা কে ভাগ করে নিজেদের কাছে রাখবে ।
,
রহমান সাহেব সকাল থেকে চুপচাপ বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছেন । সালেহা বেগম আলাদা আলাদা ব্যাগে নিজেদের কাপড় গুছিয়ে রাখছেন । এমন সময় বড়ো ছেলে আর বউ এলেন ।এসে বললো মা তুমি রেডি আমার হাতে সময় নেই তাড়াতাড়ি চলো। সালেহা বেগমের চোখ ছলছল করছে বুক ফেটে যাচ্ছে কষ্টে।
,
একটু পর ছোট ছেলে বউ নিয়ে আসলো বললো বাবা তুমি এখনও বসে আছো আমার অফিসে একটা জরুরি মিটিং আছে তাড়াতাড়ি রেডি হও। রহমান সাহেব এবার হাতের পেপার টা রাখলেন চোখ থেকে চশমা খুলে টেবিলের উপরে রেখে বললেন আমি জানি তোরা অনেক বড়ো বিজনেস ম্যান । দশটা মিনিট আমার জন্য এখন তোদের দিতে হবে । এখানে বস আমি তোদের একটা গল্প বলবো,দুই ভাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে ।আর ভাবছে বাবা কি পাগল হয়ে গেল আমরা কতো বিজি এখন কি গল্প শোনার সময় ।
দুই ভাই পাশে বসলো। যার যার বউ তাদের কাছেই দাঁড়িয়ে আছে । এবার রহমান সাহেব বললেন ,
আমি যখন চাকরি করতাম বেতন ছিল খুব অল্প । সারা মাস চলতে হিমসিম খেতে হতো। শেষে হাত একদম খালি হয়ে যেতো। তোদের বয়স তখন আট আর ছয়। একদিন অফিস থেকে বাসায় আসতেই দেখি তোরা মুখ ফুলিয়ে বসে আছিস। তোদের মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম তোদের সাইকেল দরকার । সে দিন তোদের আমি কিছু বললাম না। পরের দিন বাজারে গিয়ে একই রকম দুইটা সাইকেল এনে তোদের হাতে দিলাম । তোদের সে কি আনন্দ ।
তোর মা তখন বলেছিল , মাসের শেষ কোথায় পেলে টাকা । আমি হেসে দিয়ে বলেছিলাম আল্লাহ যোগাড় করে দিয়েছে । তোর মা আবার বললো তুমি একটা না হয় এখন আরেক টা পরে কিনতে ।
আমি তখন কি বলেছিলাম জানিস ? বলেছিলাম সবার একটা কলিজা থাকে কিন্তু আমার তিন টা সন্তানই তিন টা কলিজা । আমি চাই দুজন এক সাথে খুশি থাকুক ।
এই বৃদ্ধ বয়সে আমাদের পৃথক করে রাখবি! আচ্ছা বড়ো খোকা ছোট খোকা একটা উওর দে তো ?
আমার তো দুইটা ছেলে দুজনের কাছে ভাগ করে থাকবো কিন্তু তোদের কি হবে ? তোদের তো একটা সন্তান তখন পারবি দুজন বৃদ্ধ বয়সে দুই সন্তানের কাছে থাকতে ?
আমাদের নিয়ে তোদের ভাবতে হবে না। কাল দুইটা টিউশনি ঠিক করে রেখে এসেছি আর বাড়ি ভাড়া যা পাবো চলে যাবে আমাদের । এই শেষ বয়সে এই বুড়োবুড়ি এতো ধকল সইতে পারবে না। যদি কখনও তোদের মনে চায় এসে দেখে যাস।
রহমান সাহেবের এমন কথা শুনে সারা ঘরে নিস্তব্ধ বয়ে গেল । দুরে দাঁড়িয়ে সালেহা বেগম কাঁদছেন । দুই ছেলের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে গরম অশ্রু ।যেটা বাবার পা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে । হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বাবার পা জড়িয়ে ধরে বললো আমাদের মাফ করে দাও। অনেক বড়ো ভুল করেছি। এখন থেকে আমরা ও এখানে থাকবো বাবা । কলিজা ছাড়া কোনও বাবা মা ভাল থাকতে পারে না।
রহমান সাহেব দুই সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন । অনেক দিন পর সন্তানদের এভাবে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরতে মনটা ঠান্ডা হয়ে গেল । আর কোনও দুঃখ নেই। এই শান্তি টুকু আগামী দিন গুলি খুব ভাল ভাবে বেঁচে থাকতে দেবে বৃদ্ধ বাবা মা কে।
আরো পড়ুন–
☞ আজ অভিনেত্রী জয়া আহসানের ৪৭ তম জন্মদিন
☞ ভালবাসার সাদা বকের ছোট ছানাটি
☞ ইসলামিক জীবন কাহিনী পর্ব-১
☞ শিশু রোকেয়ার জ্ঞান ফিরলেও ফেরেনি রাবেয়ার জ্ঞান
☞ এক বৃদ্ধা আপেল বিক্রেতা
☞ আজ অভিনেত্রী জয়া আহসানের ৪৭ তম জন্মদিন
☞ ভালবাসার সাদা বকের ছোট ছানাটি
☞ ইসলামিক জীবন কাহিনী পর্ব-১
☞ শিশু রোকেয়ার জ্ঞান ফিরলেও ফেরেনি রাবেয়ার জ্ঞান
☞ এক বৃদ্ধা আপেল বিক্রেতা
আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com
No comments:
Post a Comment