Breaking

Monday, October 7, 2019

যে কারণে আবরার ফাহাদকে নির্মম ভাবে জীবন দিতে হল || Why Abrar Fahad was brutally killed

আবরার ফাহাদ । বয়স ২১ বছর । থাকতো বুয়েটের শেরে বাংলা হলে । কুষ্টিয়ার ছেলে ফাহাদ, এক্স নটরডেমিয়ান এবং বুয়েটের ইলেক্ট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ডিপার্টমেন্টে পড়তো। ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের লেভেল-২ এর টার্ম ১-এর ছাত্র ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ১৭ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন তিনি, 2nd year-এ  উঠেছেন কিছুদিন হলো। ০৫/১০/২০১৯ ইং শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের পর রোববার ০৬/১০/২০১৯ ইং মধ্যরাতে ফাহাদের মৃত্যুর খবর পায় তার পরিবার।


আনুমানিক সন্ধ্যা সাতটা থেকে আটটার মধ্যে ওর রুম থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে, রাত দুইটার সময় ওর লাশ পাওয়া যায় একতলা আর দুইতলার মাঝের স্থানে, সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। মারধরের সময় ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের নেতারা। আবরারকে শিবির সন্দেহে রাত আটটার দিকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনা হয়। সেখানে তার মোবাইলে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করা হয়, ফেসবুকে বিতর্কিত কিছু পেইজে তার লাইক দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, সে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিল এমনটাই উঠে আসছে আবরার হত্যার সংবাদে পত্রিকার রিপোর্টগুলোতে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘ফাহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বুয়েট ছাত্রলীগ নেতারা। একজন নেতা বলেন, ‘প্রমাণ পাওয়ার পরে চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আরও দু'জন সিনিয়র নেতা সেখানে আসেন। এক পর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো ওরা মারধর করে থাকতে পারে। পরে রাত ৩ টার দিকে শুনি ফাহাদ মারা গেছে।’

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ফাহাদের একজন রুমমেট ঘটনার বিষয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, টিউশনি শেষে রুমে রাত নয়টার দিকে আসি। তখন আবরার রুমে ছিলো না। অন্য রুমমেটদের কাছ থেকে জানতে পারি, তাকে ছাত্রলীগের ভাইয়েরা ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে  রাত আড়াইটার দিকে হলের একজন এসে আমাদের বলল- আবরার কি আপনাদের রুমমেট? তিনি বললেন হ্যাঁ । এরপর তিনি সিঁড়ি রুমের দিকে যাওয়ার জন্য বললেন। পরে সিড়ি রুমের দিকে গিয়ে দেখি একটা তোশকের ওপরে আবরার পড়ে আছে। পরে ডাক্তার খবর দিলে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কে এবং কারা খুন করেছে, এবার সেটা স্পষ্ট! এই বুয়েট দেখবো কখনো ভাবি নাই। বিশ্বাস করতে পারছি না কোনভাবেই আবরার নেই। এ হত্যার বিচার চাই। যে কোনো মূল্যে, এ হত্যার বিচার চাই। এই ছেলেটা বারো ঘন্টা আগেও তরতাজা ছিলো, বেঁচে ছিলো, পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, এখন আর সে নাই।


যে ভারত বিরোধী পোষ্ট দেয়ায় খুন হল বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ! তার পোষ্টটি ছিল নিম্নরূপ-
১। ৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশেে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিয়েছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সেই মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।

২। কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়া-কামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চায় না, সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড় লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব। 

৩। কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তর ভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে, সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।

হয়তো এ সুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
"পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।"

৪। ভারত ও হিন্দুত্ববাদের প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এদের সম্পূর্ণ পৃষ্ঠপোষক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এই সত্যকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই।

তাহলে কি এই স্ট্যাটাসের কারনেই ফাহাদকে হত্যা করেছে বুয়েট ছাত্রলীগ? রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে মেরেই ফেললো! জীবন এই দেশে এতো সস্তা কেনো?? বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে গতকাল রাতে রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করলো বুয়েট ছাত্রলীগ!

পরিবারের সদস্যরা জানান, ১০ দিন আগে ছুটিতে দুই ভাই বাড়িতে এসেছিলেন। ২০ তারিখ পর্যন্ত বাড়িতে থাকতে চেয়েছিলেন আবরার। তবে সামনে পরীক্ষা, পড়া হচ্ছে না বলে গতকাল ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

ছেলের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়ে মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘গতকাল সকালে আমি তাকে নিজে ঘুম থেকে ডেকে তুলি। সে ঢাকায় রওনা দেয়। মাঝে তিন থেকে চারবার ছেলের সঙ্গে কথা হলো আমার। বিকেল পাঁচটায় হলে পৌঁছে ছেলে আমাকে ফোন দেয়। এরপর আর কথা হয়নি। রাতে অনেকবার ফোন দিয়েছিলাম, ফোন ধরেনি।’

আবরারের ছোট ভাই বলেন, ‘ফোন না ধরায় আমি ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ভাইয়াকে নক করি। ভাইয়া ফেসবুকে অ্যাকটিভ ছিল, তবে সাড়া দেয়নি।

মেধাবী একটি ছেলের মৃত্য হল তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আরও কিছু ছাত্রের হাতে। মেরেই ফেললো পাষন্ডরা, কেড়ে নিলো একটি তাজা প্রাণ ।


আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky