সংক্ষেপে উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ (ক) নাগরিক কাকে বলে?
উত্তর: নাগরিক হলো তারা, যারা রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকে। রাষ্ট্রের কল্যাণ কামনা করে। রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে। বিশ্বের সব মানুষ কোনো না কোনো দেশের নাগরিক। আমাদের জন্ম বাংলাদেশে। তাই আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
প্রশ্নঃ (খ) নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে কী কী অধিকার ভোগ করে?
উত্তর: নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। এমন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা আমাদের নাগরিক অধিকার। নিচে নাগরিকের রাষ্ট্রীয় অধিকার উল্লেখ করা হলো।
১। নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার।
২। নির্বাচিত হওয়ার অধিকার।
৩। রাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে বসবাসের অধিকার।
৪। বিদেশে অবস্থানকালীন নিজ রাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা লাভের অধিকার।
৫। সরকারি চাকরি লাভের অধিকার।
৬। ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার।
৭। সরকারের সমালোচনা করার অধিকার।
প্রশ্নঃ (গ) নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে পার্থক্যঃ রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকি এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করে থাকি। নিচে নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলো।
সামাজিক অধিকারঃ নাগরিকের জীবন রক্ষার অধিকার দেয়। নিজের মতামত প্রকাশের অধিকার দেয়। রাষ্ট্রের সর্বত্র অবাধে চলাফেরার অধিকার দেয়। শিক্ষা লাভের অধিকার দেয়। নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেয়। আইনের চোখে সমান অধিকার দেয়। সম্পত্তি ভোগের অধিকার দেয়।
রাজনৈতিক অধিকারঃ নাগরিকের নির্বাচিত হওয়ার অধিকার দেয়। সরকারের সমালোচনা করার অধিকার দেয়। রাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে বসবাসের অধিকার দেয়। সরকারি চাকরি লাভের অধিকার দেয়। ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার দেয়। বিদেশে অবস্থানকালীন নিজ রাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা লাভের অধিকার দেয়। ভোট দেওয়ার অধিকার দেয়।
প্রশ্নঃ (ঘ) নাগরিকের কেন কর প্রদান করা উচিত? কর প্রদান না করলে কী হবে?
উত্তর: নাগরিকের কর প্রদানের কারণঃ নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন অধিকার ভোগ করে। পাশাপাশি প্রতিটি নাগরিককে রাষ্ট্রের প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। দেশের শাসনকাজ পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য অর্থের প্রয়োজন। নাগরিকের ওপর কর আরোপ করে রাষ্ট্র এই অর্থ সংগ্রহ করে। তাই রাষ্ট্রীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য নাগরিকের কর প্রদান করা উচিত।
কর প্রদান না করলে অসুবিধাঃ নাগরিকেরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে যেরূপ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন, তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকেরও কিছু কর্তব্য পালন করতে হয়। সমাজে সুষ্ঠুভাবে জীবিকা নির্বাহের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক অধিকার প্রয়োজন। নাগরিকের জীবন সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য ও রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য রাষ্ট্রের অর্থের প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্র নাগরিকের ওপর কর আরোপ করে অর্থ সংগ্রহ করে। তাই নিয়মিত কর প্রদান করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কর প্রদান না করলে রাষ্ট্রের শাসনকাজ পরিচালনা করতে অসুবিধা হবে এবং দেশের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটবে।
প্রশ্নঃ (ঙ) নির্বাচন কাকে বলে? তুমি কি কোন নির্বাচন দেখেছ? উত্তর হ্যা হলে এর নাম লেখ।
উত্তরঃ গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। আমাদের দেশে প্রতি পাঁচ বছর পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রতি বছর আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এসব নির্বাচনের মাধ্যামে জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য সংসদ সদস্য, মেয়র , ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার চেয়ারম্যান ও অন্যান্য জন প্রতিনিধি নির্বাচন করে থাকে।
নির্বাচনঃ সুনিদিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্য সচেতন ভাবে কোনো প্রতিনিধি নির্বাচন করার প্রক্রিয়াকে নির্বাচন বলে। সুষ্ঠু নির্বাচন দেশ ও জনগনের জন্য অপরিসীম কল্যাণ বয়ে আনে। তাই ভোটাধিকার প্রাপ্ত সকল নাগরিক যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সুস্ঠভাবে ভোট দিতে পারে সে জন্য নির্বাচনের দিন সরকারি ছুটি থাকে।
আমি কোন নির্বাচন দেখেনি। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় আমি খুব ছোট থাকায় সেই স্মৃতি মনে করতে পারছিনা।
প্রশ্নঃ (চ) সুষ্ঠু নির্বাচনে নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কী? নাগরিক এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
উত্তরঃ সুষ্ঠু নির্বাচনে নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরণের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিম্নরূপ-
১) নির্বাচনের মাধ্যমে সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে।
২) প্রতিটি ভোটাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিককে ভোট প্রদান করতে হবে।
৩) সততার সঙ্গে সকল নাগরিককে ভোট দিতে হবে।
৪) নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রণীত সকল আইন মেনে চলতে হবে।
৫) নির্বাচন আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।
নাগরিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সৃষ্ট সমস্যাঃ নির্বাচনে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবে যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন করা সম্ভব হয় না। এতে দেশের ক্ষতি হয়। তাই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য।
No comments:
Post a Comment