Breaking

Thursday, April 26, 2012

পঞ্চম শ্রেণি - সমাজ - অধ্যায় ৬ - পরমতসহিষ্ণুতা

সংক্ষেপে উত্তর দাওঃ

প্রশ্নঃ (ক) একজন নেতা সমাজের জন্য কী করতে পারেন?
উত্তরঃ সমাজের জন্য একজন নেতা যা করতে পারেনঃ কোনো কাজ যিনি সকলের সামনে থেকে করেন, সবাইকে দিক-নির্দেশনা দেন। মূলত, যিনি কোনো একটি দলের নেতৃত্ব দেন, তিনিই নেতা। একজন নেতা সমাজের জন্য নিচে উল্লেখিত কাজ করতে পারেন। 

১. একটি বিশৃঙ্খল সমাজকে জাগিয়ে তুলতে পারেন।
২. সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন।
৩. সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেন। পরিশেষে বলা যায়, সমাজের সব মানুষের মঙ্গলময় সব কাজেই একজন নেতা করতে পারেন।

প্রশ্নঃ (খ) আদর্শ নেতার গুণাবলি কী কী?
উত্তরঃ নেতৃত্ব মানুষের মানবীয় গুণ। মানুষ জন্মসূত্রে অথবা পরিবেশ থেকে এ গুণ অর্জন করে থাকে। নেতৃত্বের গুণাবলি সব মানুষের মধ্যেই আছে। কারও কম বা বেশি। প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ লাভ করে। তবে আদর্শ নেতা হতে হলে কিছু বিশেষ গুণ থাকা প্রয়োজন। মানুষকে ভালোবাসা, তাদের মঙ্গল কামনা করা ও জনগণের সেবা করাই একজন আদর্শ নেতার কাজ। এসব ছাড়াও একজন আদর্শ নেতা হতে হলে আমরা যেসব গুণাবলি বিচার করি সেগুলো হলোঃ 
 
১. সবার সঙ্গে মিশতে পারা।
২. স্পষ্টভাষী হওয়া ও সুন্দরভাবে কথা বলা।
৩. ন্যায়-অন্যায় বোধ থাকা।
৪. দায়িত্বশীল হওয়া।
৫. সাহসী মনোভাব থাকা।
৬. পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারা।
৭. অন্যকে সহযোগিতা করার মন-মানসিকতা থাকা।
৮. নিজের অন্যায় বা দোষ স্বীকার করা।
৯. সুন্দর, নীরোগ স্বাস্থ্য হওয়া।

প্রশ্নঃ (গ) গণতন্ত্র আমাদের কী দেয়?
উত্তরঃ গণতন্ত্রের অর্থ হচ্ছে ‘জনগণের শাসন’। সহনশীলতা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরিবারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আমরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণ করে থাকি। যেমনঃ কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে বাবা-মা, ভাইবোন সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিই কোথায় বেড়াতে যাওয়া যায়। 

আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিজের মত দিই। এভাবে পরিবারের সবার মতামত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে গণতন্ত্র পরিপূর্ণতা পায়। 

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে ভয়ভীতি বা জোর করে কিছু করা যাবে না। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, নির্বাচনে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারের নিশ্চয়তা দেয় শুধু গণতন্ত্র।

আমরা সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে অধিকাংশের মতামত গ্রহণ করব এবং পরস্পরকে সাহায্য করব। তাহলেই আমরা গণতন্ত্রের অসীম সুবিধা ভোগ করতে পারব।

প্রশ্নঃ (ঘ) কীভাবে আমরা সব ক্ষেত্রে অপরের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করে থাকি?
উত্তরঃ সমাজে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকা সত্ত্বেও আমরা একে অন্যের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে থাকি। কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষের যুক্তিসংগত মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। পারস্পরিক সহনশীলতার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছি। এভাবে আমরা সব ক্ষেত্রে অপরের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করে থাকি।

প্রশ্নঃ (ঙ) পরিবারে আমরা কীভাবে গণতন্ত্র চর্চা করি?
উত্তরঃ পরিবার সমাজের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। পরিবার বিভিন্ন রকম কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। তার মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা অন্যতম একটি কাজ। 

অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাকে গণতান্ত্রিক মনোভাব বলা হয়। আমরা আমাদের পরিবারে গণতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করি এবং নিয়মিত গণতন্ত্র চর্চা করে থাকি। 

পরিবারের বিভিন্ন বিষয় যেমন- ছেলে-মেয়েদের বিয়ে, জন্মদিন, লেখাপড়া, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা, ঈদ বা পূঁজার পোশাক ক্রয় ইত্যাদিতে আমরা মতামত প্রদান করি। এসব বিষয়ে মত প্রকাশের সময় আমরা পরিবারের সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সবচেয়ে উপযুক্ত ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আমাদের পরিবারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের রীতিনীতিই হলো গণতন্ত্র চর্চা। 

পরিবারের গণতন্ত্র চর্চার প্রতিফলন ঘটে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে। কাজেই, পরিবারকে গণতন্ত্র চর্চার প্রাথমিক কেন্দ্র বলা যেতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Clicky