Breaking

Friday, October 18, 2019

কারা ফটকের সামনে ফেলে গেল ১ মাসের নবজাতককে || Someone dropped a cute baby in front of Jail Gate

পঞ্চগড় পৌরসভার কামাতপাড়া এলাকার এই ব্যবসায়ী অশোক চন্দ্র মোদক। গত ১৭/১০/২০১৯ ইং বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ব্যবসায়ী অশোক চন্দ্র মোদক বাড়ির সামনে থেকে ফুটফুটে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। বয়স আনুমানিক এক মাস। পরনে ছিল কমলা রঙের জামা, কপালের বাম দিকে কাজলের কালো টিপ। মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল একটি পরিষ্কার তোয়ালেতে।
জুলেখা বেগম নামের স্থানীয় এক নারী প্রথমে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন। ডাক দেন তাঁর ছেলে জুয়েলকে। এরপর ঘটনা দেখে কাছে আসেন মোজাম্মেল হক নামের আরেক ব্যক্তি। শিশুটিকে দেখতে এভাবেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। এরই মধ্যে খবর দেওয়া হয় পঞ্চগড় সদর থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে। শহরজুড়ে বেওয়ারিশ শিশু পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে বাড়তে থাকে উৎসুক মানুষের ভিড়। শিশুটিকে দত্তক নিতে বাড়তে থাকে নিঃসন্তান দম্পতির সংখ্যা।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলীসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা। শিশুটিকে হাসপাতালের সিসি (চাইল্ড কেয়ার) ইউনিটে রাখা হয়। এরপর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে রাখা হয় শিশুটিকে। পরে হাসপাতালে উপস্থিত অন্য শিশুদের মায়েদের মাধ্যমে শিশুটির খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

শিশুটি পাবার কিছুক্ষণ পর বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শিশুটির মায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে—এমন খবরে আবারও কামাতপাড়া এলাকায় ছুটে যায় পুলিশ। তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারও যান সেখানে।

কামাতপাড়া এলাকার পেয়ারা মজুমদার নামের এক গৃহবধূর সংবাদে জানান, প্রায় দুই বছর আগে রিমু আক্তার নামের এক তরুণী স্বামীকে নিয়ে এই এলাকায় ভাড়া থাকতেন। তখন তাঁর একটি পুত্র সন্তান ছিল। পরে তিনি অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে এলাকা থেকে চলে যান। দীর্ঘদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে পেয়ারার বাড়িতে আসেন রিমু। সঙ্গে তাঁর তিন বছরের ছেলেটি এবং কোলে একটি ফুটফুটে নবজাতকও ছিল। রিমু তাঁর কোলের সন্তানটি পেয়ারাকে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পেয়ারার বাড়িতে মেহমান থাকায় ব্যস্ততার কথা বলে তাঁকে আপাতত চলে যেতে বলেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি জানতে পারেন, পাশের বাড়ির দরজার সামনে একটি শিশু পাওয়া গেছে। পেয়ারা আরও জানান, রিমুর কোলের শিশুটিও তোয়ালে দিয়ে মোড়ানো ছিল। কপালে কাজলের টিপ ছিল। এই শিশুটি রিমুর কোলে থাকা শিশুটিই হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। পেয়ারার বর্ণনা শুনে পুলিশ রিমু আক্তার নামে ওই নারীকে খুঁজতে শুরু করে। তবে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের কোথাও ওই নারীকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।

শিশুটির স্বাস্থ্যের ব্যাপারে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মঈন খন্দকার এক সংবাদে বলেন, শিশুটির বয়স আনুমানিক এক মাস। শারীরিকভাবে শিশুটি সুস্থ আছে। তবে তার জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো বুকের দুধ।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ১৮/১০/২০১৯ইং শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদে  বলেন, ‘আমরা শিশুটির পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন থানায় শিশুটির ব্যাপারে তথ্য পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন যে নারীর কথা বলছেন, আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই শিশুটি তার প্রকৃত অভিভাবকদের ফিরে পাক।’

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন এক সংবাদে বললেন, ‘কোনো মা যদি শিশুটিকে এভাবে ফেলে রেখে যায়, তাহলে তা খুবই দুঃখজনক। ফুটফুটে বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ সুন্দর করা আমাদের দায়িত্ব, রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা চেষ্টা করছি শিশুটিকে তার প্রকৃত মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে।’

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘শিশু জাদুকর’ কবিতায় শিশুকে নিয়ে অপার বিস্ময়ে লিখেছেন, পার হয়ে কত নদী কত সে সাগর/ এই পারে এলি তুই শিশু জাদুকর। বাস্তবের শিশুটি জাদুর মতো আবির্ভূত হয়েছে বটে, তবে তা মোটেও কোনো আনন্দদায়ক ঘটনা নয়। কেননা শিশু কন্যাটি অনাদরে পড়ে ছিল এক ব্যবসায়ীর দরজার সামনে।


আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky