Breaking

Friday, October 18, 2019

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের নেওয়া সন্ত্রাস রুখে দেওয়ার দৃঢ় শপথ || BUET strongly vows to prevent terrorism given to students

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ১৭/১০/২০১৯ইং বুধবার দুপুরে ছাত্রছাত্রীরা বুয়েট মিলনায়তনে জড়ো হয়ে মিলিত কণ্ঠে দৃঢ় শপথ নিয়েছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা সব ধরনের সন্ত্রাস, অন্যায় ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন।
তারা শপথবাক্য উচ্চারণ করেছেন যে - ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার নিমিত্তে আমার ওপর অর্পিত ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক, নৈতিক ও মানবিক সব ধরনের দায়িত্ব সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।’
তারা আরও শপথ নিয়েছেন- নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জ্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার তারা সমূলে উৎপাটন করবেন, বিশ্ববিদ্যালয় আঙ্গিনায় শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতসারে হওয়া প্রতিটি অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবাই সর্বদা সোচ্চার থাকবেন।

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ভিসি ও বিভিন্ন হলের প্রভোস্টরাও শপথ নিয়েছেন, যদিও শিক্ষকরা মিলনায়তনে উপস্থিত থাকলেও শপথে অংশ নেননি।

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। বস্তুত এমন একটি শপথ অনুষ্ঠানের আসলেই খুবই প্রয়োজন ছিল বুয়েটে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের অনাচার সংঘটিত হয়ে আসছিল। হলগুলোর কিছু রুমকে টর্চার সেল বানিয়ে প্রতিপক্ষ বা অপছন্দের শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা ছিল যেন এক নিয়মিত ঘটনা। এসব অপকর্ম করত বিশেষত সরকারদলীয় সহযোগী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বলতে গেলে বুয়েটে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি বিরাজ করত এবং বিশেষত জুনিয়র ছাত্ররা সবসময় আতঙ্কিত থাকত কখন তাদের ওপর নেমে আসবে প্রবল নির্যাতন। এবং বুয়েটের এই সংস্কৃতির সর্বশেষ শিকার হতে হয়েছেন দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেই ফেলল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শনাক্তকারী হত্যাকারীদের প্রায় সবাই অবশ্য ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন এবং তাদের যতটা সম্ভব দ্রুত বিচার করার প্রক্রিয়া চলছে। আবরারের হত্যাকাণ্ডটি বুয়েটের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং তারা আন্দোলনের মাধ্যমে বেশকিছু দাবি-দাওয়াও আদায় করে নিতে পেরেছে।

এখনও অবশ্য তাদের একটি বড় দাবি পূরণ হয়নি। হত্যাকারী ছাত্রদের স্থায়ীভাবে বুয়েট থেকে বহিষ্কারের দাবিও করেছেন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু তা এখনো পূরণ হয়নি। মামলার চার্জশিট তৈরির পর এই দাবি পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ভিসি।

আশা করা যেতে পারে, সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের শপথ গ্রহণের পর বুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতিতে একটা গুণগত পরিবর্তন আসবে। বস্তুবে এতটাদিন ধরে বুয়েটে যা ঘটে আসছিল, তা কোনো মানদণ্ডেই গ্রহণযোগ্য নয়। বুয়েট বলতে গেলে দেশসেরা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরাই পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকে। দেশে তো বটেই বিদেশেও রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম। এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শৃঙ্খলার সঙ্গে পরিচালিত হবে এটাই কাম্য।
ছাত্রছাত্রী ও ভিসি যে শপথ গ্রহণ করেছেন, পরবর্তী সময়ে তারা সেই শপথের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন- ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকসহ সমগ্র দেশবাসীর এটাই চাওয়া।


আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky