Breaking

Saturday, August 31, 2019

আপনার শিশুকে কোন টিকা, কেন দিবেন? || Vaccine your child, Why?

এমন একটা সময় ছিল যখন বাবা-মা এর প্রধান দুশ্চিন্তা ছিল যে শিশুটি  বেঁচে থাকবে তো ? এর কারণ ছিল কয়েকটি ভয়াবহ রোগ। যেমন---যক্ষ্মা, হাম, ধনুষ্টঙ্কার এর মত প্রাণঘাতী রোগগুলো ছিল অসংখ্য শিশুর মৃত্যুর প্রধান কারণ। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতি দিয়েছে অামাদের রক্ষাকবচ। আজ একটি টিকা ই এই মারাত্বক রোগগুলো থেকে আমাদের শিশুদের রক্ষা করতে পারে। সরকার আর দাতা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত এনজিও গুলোর অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ আমাদের দেশের প্রসূতি ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই রোল মডেল। শিশুর জন্মের ১ বছরের মধ্যে ৭ টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টিকা শিশুকে দিতে হবে। আমাদের দেশে সরকারী ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে এই সকল টিকাদান কর্মসূচী পরিচালিত হয়।


শিশুদের প্রয়োজনীয় টিকা:
শিশুদের কী কী রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেয়া হয়:

১. বিসিজি:
বিসিজি টিকা হলো যক্ষ্মার প্রতিষেধক। এই টিকার শুধু মাত্র ১টি ডোজ। এটি শিশুর জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যে দিতে হয়। বিসিজি টিকা দিলে মরণব্যাধি যক্ষ্ম থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। 

২. এম.আর. টিকা:
এম- মাম্পস, আর- রুবেলা রোগের টিকা। এই রোগ গুলোর টিকা প্রধানত ৪ থেকে ৬ বছরের মাঝেই দিয়ে দিতে হয়।

৩. ডিপিটি:
ডি- তে ডিপথেরিয়া, পি- তে পারটোসিস বা হুপিং কাশি ও টি- তে টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কার। এর ধারা ৩টি মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ণ রোগের নাম বুঝায়। ডিপিটি টিকাটি এই ৩টি রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে । তাই এটি শিশুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ টিকা।

৪. হেপাটাইটিস-বি:
হেপাটাইটিস-বি এর ভ্যাকসিন ডোজ ৪টি ৷ প্রথম ৩টি একমাস পরপর এবং ৪র্থটি প্রথম ডোজ থেকে এক বছর পর ৷ এবং পাঁচ বছর পর বুস্টার ডোজ নিতে হয়৷

৫. ইনফ্লুয়েঞ্জা:
ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জন্য সাধারণত ২ ধরনের টিকা আছে- টিআইবি ও এএআইভি। এর মধ্যে টিআইবি ৬ মাস বয়সে এবং এএআইভি ২ বছর বয়সের পর দিতে হয়।

৬. পোলিও:
পোলিও টিকা দুইভাবে দেয়া যেতে পারে। যথা: ও. পি. ভি. এবং আই. পি. ভি.। ও. পি. ভি. হল ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন যা মুখে খাওয়ানো হয়ে থাকে এবং আই. পি. ভি. হল ইনএক্টিভেটেড পোলিও ভ্যাকসিন যা ইনজেকসান এর মাধ্যমে দেওয়া হয়ে থাকে।

 ৭. হাম (মিজলস):
হামের টিকা শিশুর ১৫ মাস বয়সে দিতে হয় । হাম থেকে বাঁচার জন্য শিশুদের অবশ্যই হামের টিকা দেয়া উচিত।

৮. টাইফয়েড টিকা:
টাইফয়েড এ  শিশুদের শরীর এর যে কোনো অঙ্গ বিকল করে দিতে পারে এবং শিশু হারিয়ে ফেলতে পারে তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতার জীবণ । ২ বছর বয়সের পর থেকে
শিশুদের এই টিকাটি ৩ বছর পর পর দিতে হয়।

৯. রোটা ভাইরাস টিকা:
রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে বাচ্চাদের এর প্রতিষেধক রোটাভাইরাস ভ্যাকসিন বা আরভি দিতে হবে। ডায়রিয়ার প্রতিষেধকের টিকা ৩টি ডোজে নিতে হয়। প্রথম ডোজ ৬ থেকে ১২ সপ্তাহের বয়সের মধ্যে দিতে হবে। পরবর্তী ডোজ ৪ মাসের মাঝে দিতে হবে।

১০. চিকেন পক্স টিকা:
চিকেন পক্স বা জল বসন্ত একটি ভাইরাস সংক্রমক রোগ। জল বসন্ত প্রতিরোধ করতে শিশুর জন্মের ১২ মাস পরে এবং ৪-১২ বছরের মাঝে ২ ডোজে টিকা দিতে হয়।

কোথায় দিবেন আপনার শিশুর গুরুত্বপূর্ণ টিকা :
নিকটস্থ সদর হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল,কমিউনিটি ক্লিনিক অথবা ক্ষেত্র বিশেষ কোন কোন প্রইভেট ক্লিনিকে খোঁজ নিলেই জেনে নিতে পারবেন কখন কখন সেখানে টিকা দেয়া হয়। টিকাদান কর্মসূচী সম্বলিত সাইনবোর্ড এ টিকাদান কর্মীর নাম, মোবাইল নাম্বার ও টিকাদানের তারিখ লেখা থাকে। ইপিআই কার্যক্রমের মাধ্যমে টিকা দিয়ে যে আটটি রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেগুলো হলোঃ ধনুষ্টংকার, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, পোলিও, হাম, যক্ষ্মা, হেপাটাইটিস -বি, হেমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা । এই সবকটি রোগই সংক্রামক এবং বাংলাদেশে বিদ্যমান। এক বৎসরের কম বয়সের শিশুদের এগুলো অত্যন্ত মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করে। এই সবকটি রোগই টিকাদানের মাধ্যমে  প্রতিরোধ করা সম্ভব।


আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky