Breaking

Saturday, November 23, 2019

শিশুকে শাসন করুন সঠিক ভাবে || Control your child in correct way

যাদের ঘরে ছোট বাচ্চা আছে তাদের মেজাজ ঠিক রাখাটা প্রায়ই বেশ কঠিন হয়ে পড়ে । তাই প্রায়ই দেখা যায়, তাদের শান্ত করার জন্য  মা-বাবারা শিশুদের বকা দিয়ে থাকে। আর সন্তান যখন কোন ভুল করে ফেলে তখন অনেক পিতামাতাই বেশ কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার করে শিশুদের শাসন করার জন্য দ্বিতীয়বার চিন্তা না করেই। কারণ তারা মনে করেন যে সন্তানকে বাথরুমে বা অন্ধকার কক্ষে আটকে রাখার চেয়ে তাকে মৌখিকভাবে শাসন করা ভালো। কিন্তু ভুলটা এখানেই! শিশুকে শারীরিকভাবে আঘাত না করেও মৌখিকভাবে বকা দিলেও তার আত্মবিশ্বাস কমে যায়। তাছাড়া শিশুকে কঠিন শব্দ ব্যবহার করে বকা দিলে তাদের যে ক্ষতি হয় সে বিষয়ে জেনে নিই চলুন।

নবজাতক থেকে এক বছরের শিশুদের:
এই বয়সের শিশুদের দেখাশুনা করার ক্ষেত্রে প্রচুর ভালোবাসা, যত্ন, স্নেহ এবং ধৈর্য থাকা প্রয়োজন। যদি আপনি প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে নাও থাকতে পারে এবং আপনি হয়তো আপনার সন্তানের উপর চেঁচামেচি করতে পারেন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মতে, এটি আপনাকে কোনভাবেই সাহায্য করবে না। আপনার ছোট শিশুটির কাছে বার্তা পৌঁছানোর জন্য যদি আপনি বকা দেন তাহলে আপনি শুধু একজন বিরক্তকর মানুষেই পরিণত হবেন।

এর প্রভাব:
এই বয়সের শিশুদের উপর চেঁচামেচি করা প্রাসঙ্গিক হতে পারে না। এতে তারা শুধু বিরক্তই হবে এবং এতে তাদের ঘুম চক্রে বেশি ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে।

যা করা উচিত:
শিশুকে শান্ত করার চেষ্টা করুন, তাকে জড়িয়ে ধরুন, তার সাথে খেলা করুন অথবা কথা বলুন। যাতে শিশু নিরাপদ ও স্বস্তি অনুভব করে এবং এর মাধ্যমে আপনার সাথে তার বন্ধন দৃঢ় হবে।

এক থেকে তিন বছরের শিশুদের:
এই বয়সের শিশুরা খুবই নমনীয় হয় এবং এই সময়ে তাদের সাথে যে আচরণ করা হয় তা তাদের মনে যে ছাপ ফেলে তা দূর করা বেশ কঠিন হয়ে পরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুদের বকা দেয়া হয় তাদের শৃঙ্খলা শেখানোর চেয়েও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। শিশু যাতে ভেজা মেঝের উপর দিয়ে দৌড়াদৌড়ি না করে, টয়লেটের নিয়মকানুনগুলো যদি অনুসরণ না করে বা সে যদি খাবার খুব দ্রুত খায় তাহলে হয়তো আপনি আপনার শিশু সন্তানকে বকা দেন। কিন্তু সে এটি বুঝতেই পারে না।


এর প্রভাব:
এই বয়সের শিশুদের উপর চিৎকার চেঁচামেচি করলে তারা উদ্বিগ্ন হয়। অনেকবেশি বকাঝকা করলে তাদের মুক্ত চিন্তা এবং আত্মবিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

যা করা উচিত:
এক্ষেত্রে আপনি আপনার সন্তানকে শান্ত করে বসিয়ে বুঝিয়ে বলুন কেন তাকে এই কাজটি করতে নিষেধ করছেন এবং কীভাবে তা তার ক্ষতি করতে পারে।

তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের:
এই বয়সের শিশুরা নিয়মিত অন্যদের আচরণের সাথে নিজের আচরণের তুলনা করে থাকে। তাই আপনি তার সাথে যেভাবে কথা বলবেন বা বকাঝকা করবেন সে সেটা শিখবে। মনে রাখবেন এই বয়সে তারা বড়দের কাছ থেকে সম্মান আশা করে।

এর প্রভাব:
অনেকবেশি বকাঝকা দেয়া পিতামাতা ও সন্তানের বন্ধনের উপর চাপ সৃষ্টি করে। শিশু নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করে বাবা-মা যেমন চায় তেমন ভাবেই। কিন্তু এটি আত্ম-বিধ্বংসী একটি প্রক্রিয়া। এতে সে আপনার প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পরে।

যা করা উচিত:
যদি কঠিন কথা বলেও ফেলেন তাহলে দ্রুতই তাকে বুঝিয়ে বলুন কেন বলেছেন এমন কথা। যদি গ্লাস ভাঙার কারণে বা দুধ ফেলে দেয়ার কারণে বকা দিয়ে থাকেন তাহলে দুজনে একসাথে পরিষ্কারের কাজটি করুন। তার ভুল কাজটি সঠিকভাবে করার জন্য তাকে যুক্ত করুন কাজটির সাথে। আপনি যখন তার কাজের সাথে যুক্ত হবেন তখন সে শেখার জন্য আগ্রহী হবে।

শিশুকে বকা দেয়ার ও প্রয়োজন আছে:
শিশুকে একেবারেই বকা না দিয়ে বড় করাও তার পক্ষে ক্ষতিকর। শিশুকে অনেক বেশি প্রশ্রয় দিলেও সে পরবর্তীতে আপনার কথা শুনতে চাইবেনা। পরবর্তীতে অর্থাৎ ৭-৮ বছর বয়সে আপনি যখন তাকে শৃঙ্খলা শেখাতে চাইবেন তখন সে বিদ্রোহ করবে। একটা সময়ে তার মধ্যে আত্ম-বিধ্বংসী অভ্যাস যেমন- ধূমপান, দেয়ালের সাথে মাথা ঠোকা এবং বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি গড়ে ওঠবে। তাই ভালো উপায় হচ্ছে কাজ এবং এর পরিণাম পরিকল্পনা করা। শিশুকে বকা দিলেও দিন শেষে তাকে জড়িয়ে ধরুন ও স্নেহের বাক্য বলুন। এতে আপনার শিশু হয়ে উঠবে সঠিক বিবেকের একজন সঠিক সন্তান ।

আমাদের এ লেখাটি যাদ আপনার ভালে লাগে, তাহলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক  দিয়ে আমাদের সাথে থাকবেন। যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমার এই পোস্টের নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন, আমি আমার সাধ্যমত আপনাদেরকে সঠিক তথ্যটি জানানোর চেষ্টা করব। 
ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Image Source: www.google.com



আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।

No comments:

Post a Comment

Clicky