দিব্যি খুব আনন্দে অন্ধকারে ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই বলা নেই কওয়া নেই মুখের ওপর কে যেন তীব্র আলো ফেলে কাঁচা ঘুমটাই আমার ভেঙ্গে দিল। তারপর মুণ্ডুটা ধরে টেনে হিঁচড়ে নরম গরম কোটর থেকে বের করে নিল। তাতেও হল না, মাথা নিচে পা ওপরে করে ঝুলিয়ে পিঠে দমাদ্দম ঘা মারতে লাগল। একজন আবার এরই মধ্যে কাচি দিয়ে ক্যাঁচ করে কখন নাড়িটাকেও কেটে দিয়েছে। আমি এতক্ষণ সবই সহ্য করে ছিলাম, আর পারছিলাম না। পরিত্রাহি চিৎকার জুড়ে দিলাম ।
তারপর একজন আমাকে গরম জলে ফেলে যেটা করতে লাগল, তাকে ধরপাকড় ছাড়া আর কীইবা বলা যায়? আরে বাবা আমি কি আর সাঁতার জানি? এতদিন তো সাঁতারই কাটলাম। যাই হোক সেখান থেকে তুলতেই আমার কাঁপুনি শুরু হল। তারপর ঐ চেনা কোটরটার গন্ধ পেলাম, গলাটাও শুনে চেনা গেল। ভাবলাম যাক এবার আবার অন্ধকারে ঢুকে ঘুমাবো । কিসের কী? আমাকে ঐ ভদ্রমহিলার সামনে নিয়ে যাওয়া হল। তিনি তখন শরশয্যায় শুয়ে আছেন। টেরিয়ে দেখে নিলুম আমার নিশ্চিন্ত কোটরে ঢোকার পথটি একজন সেলাই করে বন্ধ করে দিচ্ছে। ভদ্র মহিলার দৃষ্টি সেদিকে আকর্ষণ করার চেষ্টা বৃথা গেল।
ওনার চোখের সামনে একটা সবুজ পর্দা ফেলা আছে, যাতে করে তিনি তাঁরই পেটে কী কী কাণ্ড করা হচ্ছে টের না পান। তারপর অস্বস্তিকর ভাবে আমার দুই ঠ্যাং ফাঁক করে একজন তাঁকে বলতে বলল, আমি ছেলে না মেয়ে। আমার ভারী অপমান হল, এ আবার কী? আমার কি কোন প্রাইভেসি নেই?
এরপর একজন নার্স এরপর আমাকে নিয়ে গেল ঘরের বাইরে। একজন ভদ্রলোক মুখ কাঁচুমাচু করে এগিয়ে এলেন। আমার দিকে না তাকিয়ে আগেই নিজের স্ত্রী কেমন আছে জিগ্যেস করলেন। এই গলাটাও চেনা লাগল। তারপর আমার সম্বন্ধে প্রথম কথা বললেন, 'এ কী, ও এত কাঁপছে কেন? গায়ে শিগগির কিছু চাপা দিন।' বাস্তবিক আমার তখন ভীষণ শীত করছিল। আমার লোকটিকে তাই তেমন খারাপ লাগল না। নার্সটির কিন্তু সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই। তার তখন আগ্রহ শুধু মিষ্টি খাওয়ার দিকে।
এদিকে আমার পেট যে খিদেয় জ্বলে যাচ্ছে কে বোঝাবে? আমি এই অল্প অভিজ্ঞতাতেই দেখেছি একমাত্র চিৎকারই হচ্ছে মনোযোগ আকর্ষণের উপায়। যথারীতি চিৎকার করে কাঁদতেই আমাকে একটা তোয়ালে দিয়ে মোড়া হল। তারপর ঐ শরশয্যায় শায়িত ভদ্রমহিলাটির কাছে আবার আনা হল। তিনি তার নল সূঁচ সরিয়ে কোন মতে আমার গালে একটা আঙুল ছোঁয়ালেন। মনে হল আমার সব কষ্ট দূর হয়ে গেল। উনি মিষ্টি করে বললেন, "এই দেখ, আমি তোর মা। আমারই পেট থেকে বেরিয়েস তুই।"
(চিত্রা সেনের সৌজন্যে)
আরো পড়ুন–
☞ ডেঙ্গুর কাছে হার মানতে হল ভিকারুননিসার অস্মিতাকে
☞ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মাহফুজা নামে এক শিশুর মৃত্যু
☞ A tragedic story about Baby Candy Kinder Joy !
☞ অবুঝ প্রাণের কান্না
☞ ডেঙ্গু কেড়ে নিচ্ছে শত শত মায়াবী প্রাণ
☞ ডেঙ্গুর কাছে হার মানতে হল ভিকারুননিসার অস্মিতাকে
☞ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মাহফুজা নামে এক শিশুর মৃত্যু
☞ A tragedic story about Baby Candy Kinder Joy !
☞ অবুঝ প্রাণের কান্না
☞ ডেঙ্গু কেড়ে নিচ্ছে শত শত মায়াবী প্রাণ
আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com
No comments:
Post a Comment