Breaking

Wednesday, April 24, 2019

জীবনের সবচেয়ে খুশির মূহুর্ত- আমার অভিজ্ঞতা

ভালোবেসে বিয়ে (Love Marriage) তারপর আটটি বছর কেটে গেলো কিন্তু সন্তানের মুখ দেখলাম না । ডাক্তার দেখালাম কিন্তু ডাক্তার বলল- কোন সমস্যা নেই । দিন দিন কেমন যেনো হতাশ হয়ে পড়ছিলাম। রিলেটিভ-পরিচিত সবার একই কথা - বাবু হয় না কেন ? কি বলবো?

হাজবেন্ড সিদ্ধান্ত নিল, এর থেকে ভাল দেশের বাইরে চলে যাবো দু'জন। ডেনমার্ক যাওয়ার জন্য কাগজ পত্রও জমা দিলাম আমরা। টাকাও জমা দিলাম। ওখানে হাজবেন্ড জব এর জন্য এপ্লাই করলো । সব ঠিকঠাক। এর মধ্যে নতুন করে হঠাৎ আমি ওষুধ খাচ্ছিলাম। এক মাস খেয়েছিও । তো ঐ মাসে পিরিওডও হয়নি । হাজবেন্ড কীট কিনে আনলো, টেস্ট করতে বলল। আমি করবো না । কারণ যতবার টেস্ট করেছি প্রতিবার নেগিটিভ রেজাল্ট আসে। বলল ঠিক আছে, তোমার করা লাগবে না, আমাকে দাও, আমিই করবো । অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওকে টেস্ট করতে দিলাম। ও যখন টেস্ট করছিল আমি কাছেও ছিলাম না। 


হঠাৎ ও আমাকে ডাকলো, আমি গিয়ে দেখি পজিটিভ। কি বলবো আমার কোনো ভাষা ছিল না । দু'জনে চুপ হয়ে গেলাম । আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, আমি মা হতে যাচ্ছি । ও বলল, দেখো আমার বাবু আমার হাত ধরে আছে। আমার দুই চোখ ভিজে গেছে ততক্ষনে । আর আমার হাজবেন্ড যে খুশিতে কি করবে বুঝাতে পারছি না । 

যাই হোক, তারপর অনেক প্রবলেম, কিছুই খেতে পারি না, পুরাই বেডে। ওদিকে ডেনমার্ক যাবো, টাকা জমা দেওয়া কমপ্লিট। দুজনে সিদ্ধান্ত নিলাম যাবো না । শুরু হলো বাবু আসার অপেক্ষা। ওর মেয়ে পছন্দ । যেদিন আল্ট্রাসনোর রিপোর্টে ডাক্তার বলল, মেয়ে বেবি। ও তো মহা খুশী ।


অনেক অপেক্ষার পর আমি আমার কন্যা রত্নকে পেলাম। মাঝে অনেক কিছু ঘটেছে কিন্তু আল্লাহ সুস্থ্য একটা বাবু দিয়েছেন । কিন্তু গর্ভাবস্থায় আমি কিছু খেতে পারতাম না, তাই বাবুর Weight ও কম হয়েছিলো। বাবু হবার এক সপ্তাহ পর বাবু শুরু করলো কান্নাকাটি। সে কি ভয়াবহ কান্না । ঘুমায় না একদম, ওর আব্বু আর আমি রাতের পর রাত জেগে থাকি। বিছানায় শুতে পারে না বাবু। বিছানায় শুলে বুকের মধ্যে ঘড়ঘড় শব্দ হয়, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। ডাক্তার দেখালাম, এক্সরে দিল বুকের। এক্সরে করালাম। রিপোর্ট এ দেখলাম ওর বুকের হাড় জমে নাই । শুলেই বুকের খাঁচা দেবে যায় আর ও নিশ্বাস নিতে পারে না । ডাক্তার বলল ছয় মাস পর এমনি ঠিক হয়ে যাবে । শুরু হলো রাত জাগা টানা ছয় মাস। প্রতিদিন কান্নাকাটির পর কোলে ঘুম । তারপর আল্লাহর রহমতে কান্নাকাটি এখন অনেক কমে গেছে ।

এত কথা এজন্য বললাম- ওকে নিয়ে আমি এখন অন্য Problem এ পরেছি, মহারানী আমার কিছুই খায় না। ১৮ মাস বয়স । কিন্তু আমি ওকে ভাত, খিচুড়ি কিছুই খাওয়াতে পারি না।  অনেক কিছু করেছি, ডাক্তার দেখাই, যে যা বলে তাই করি।


ওকে একা হাত দিয়ে খেতে দিই, তাও একটা ভাত মুখে তুলে না । পরে হোম মেইড সেরেলাক সুজি নিয়ে ফিডারের মুখ কেটে বড় করে নিয়ে মিল্ক, ঘি, বাদামগুড়া এগুলো দিয়ে রান্না করে খাওয়াই। এখন ওগুলো ও একটু একটু খায় । বিভিন্ন ফলমুল খেতে দেই। কখনো একটু খায় আবার কখনো ছুয়েও দেখে না। আর মাছ, ডিম, মাংস আমি ওকে জোর করে একটু একটু মুখে তুলে দিই। খুব কষ্ট করে খাওয়াতে হয়। কারণ এছাড়া আর কোনো রাস্তা আমি দেখি না । খুব হতাশ হয়ে যাই । মনে হয় আমি ব্যর্থ মা । আমি জানি না, আমার বাবু কোনদিন খাওয়া শিখবে কিনা । আছেন নাকি কেউ এমন অভাগী মা ।

কিন্তু আমার বাবুটা খুব এক্টিভ মাশাআল্লাহ্। ১২ মাস বয়স থেকে হাটে, দৌড়ায়, হেটে বেড়ায় । কথা ও বলে টুকটাক । কিন্তু খাবার খাওয়ার পরিমাণ খুবই কম । আর ভাত খিঁচুড়ি কিছুই খায় না । লিকুইড করে দিলেও বমি করে। কি করবো কারো কাছে কোনো পরামর্শ থাকলে দিবেন । আর আমার সোনা বাবুটার জন্য সবাই বেশি বেশি দোয়া করবেন ।

(এক মায়ের টাইমলাইন থেকে সংগৃহিত)
আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky