ক) শীতের সকালে গাছীরা কী করে ?
উত্তরঃ ‘শীতের পিঠাপুলি’ একটি ঋতু বর্ণনামূলক রচনা। আমাদের দেশের অতিথি ঋতু শীত। এ সময়ে প্রকৃতি ও আমাদের জীবনধারার মধ্যে যে সব পরিবর্তন আসে তা তুলে ধরা আলোচ্য গল্পের মূল উদ্দেশ্য।
পৌষ ও মাঘ আমদের শীতকাল। শীতকাল এদেশের ভারী মজার সময়। তখন ভোর বেলা কুয়াশায় চারদিক ঢেকে যায়। এমন সময় খেজুর গাছ থেকে মিষ্টি খেজুর রস নামে। সকাল বেলা গাছীরা বাঁকে করে কলসি ভরে মিষ্টি মিষ্টি খেজুর রস নিয়ে আসে। সেই রস থেকে খেজুর গুড় তৈরী হয়। শীতের সকালে খেজুর রস আর গুড়ের মিষ্টি গন্ধ সকলের মন কাড়ে।
খ) পিঠা তৈয়ার করতে কী কী জিনিস লাগে ?
উত্তরঃ ‘শীতের পিঠাপুলি’ একটি ঋতু বর্ণনামূলক রচনা। আমাদের দেশের অতিথি ঋতু শীত। এ সময়ে প্রকৃতি ও আমাদের জীবনধারার মধ্যে যে সব পরিবর্তন আসে তা তুলে ধরা আলোচ্য গল্পের মূল উদ্দেশ্য।
পিঠা আমাদের অতি প্রিয় খাবার। আমদের দেশে সারা বছরই পিঠা তৈরী হয়। তবে শীতের দিনে পিঠা তৈরীর ধুম পড়ে যায়। কারণ শীতকালে পিঠা তৈরীর উপকরণ বেশী পাওয়া যায়। পিঠা তৈরীর জন্য প্রয়োজন আতপ চালের গুঁড়া। মিষ্টি করার জন্য এর সাথে মিশানো হয় খেজুর গুড়, আখের গুড় বা চিনি। কোন কোন পিঠা মিষ্টি করার জন্য রসে ডুবিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়া পিঠা তৈরীর কাজে নারকেল, কলা এসব লাগে। কোন কোন পিঠায় কালো জিরা ও আদা মেশানো হয়। ঝালের পিঠার উপকরণ আবার আলাদা। এ পিঠার মিষ্টির বদলে ঝাল বা ঝাল মাংস ব্যবহার করা হয়।
গ) শীতকালে তৈরী কয়েকটি পিঠার বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ ‘শীতের পিঠাপুলি’ একটি ঋতু বর্ণনামূলক রচনা। আমাদের দেশের অতিথি ঋতু শীত। এ সময়ে প্রকৃতি ও আমাদের জীবনধারার মধ্যে যে সব পরিবর্তন আসে তা তুলে ধরা আলোচ্য গল্পের মূল উদ্দেশ্য।
পিঠা আমাদের প্রিয় খাবার। এদেশের ছেলে-বুড়ো সবাই পিঠা খেতে ভালবাসে। তাই এদেশে সারা বছরই পিঠা তৈয়ার হয়। তবে শীতকালে পিঠা তৈরীর ধুম পড়ে যায়। শীতকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা রকমের পিঠা হয়। তবে আমাদের খুব চেনা পিঠার মধ্যে তৈরী হয় চিতই, দুধচিতই, ভাঁপাপিঠা, ম্যারাপিঠা, বড়াপিঠা ও পাটিসাপটা পিঠা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া পুলিপিঠা, দুধপুলি, ক্ষীরপুলি, পাকোমান ইত্যাদি পিঠার বেশ নাম আছে।
চিতই পিঠাঃ চালের গুঁড়া ঘন করে মিশিয়ে নিয়ে উনুনে মাটির খোলার উপর পাতলা গোলা ছড়িয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে দিলেই এই পিঠা তৈরী হয়ে যায়। শীতের সকালে মাছের সুরুয়া দিয়ে গরম গরম চিতই পিঠা খেতে ভারি মজা।
দুধচিতইঃ চিতই পিঠা ভেজে তারপর খেজুর গুড় মেশানো মিষ্টি দুধে তা ভিজিয়ে বানানো হয় দুধ চিতই। সারারাত ঘন দুধে ভিজে দুধচিতই রসে টুপটুপ করে। মূখে দিলেই পিঠার রসে মুখ ভরে উঠে। খেয়ে আশ মেটে না।
ভাপাপিঠাঃ এ পিঠা তৈরীতে চালের গুড়ার সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে ঝুরঝুর করা হয়। তারপর বাটিতে চালের গুড়া নিয়ে তার সঙ্গে একটু নারিকেল ও গুড় মিশিয়ে কাপড় দিয়ে বেঁধে বাষ্প ওঠা পাতিলের ধোঁয়ার উপর কিছুক্ষণ রেখে দিলে ভাঁপা পিঠা তৈরী হয়ে যায়। শীতের ভোর বেলা নারকেল আর খেজুর গুড়ের গরম গরম ভাঁপা পিঠা খেতে সবাই পছন্দ করে।
পুলিপিঠাঃ আমাদের দেশে নানা রকমের পুলিপিঠা তৈরী হয়। বাঁকা চাঁদের মত পুলির ভেতরে থাকে নারকেল গুড়। পুলি পিঠা দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন মজা।
দুধপুলিঃ পুলিপিঠা ভেজে মিষ্টি ঘন দুধে ডুবিয়ে রেখে তৈরী হয় মজাদার দুধপুলি। এ পিঠা খেতে ভারী মজা।
ঘ) নকশি পিঠা কি? কয়েকটি পিঠার নাম লিখ।
উত্তরঃ ‘শীতের পিঠাপুলি’ একটি ঋতু বর্ণনামূলক রচনা। আমাদের দেশের অতিথি ঋতু শীত। এ সময়ে প্রকৃতি ও আমাদের জীবনধারার মধ্যে যে সব পরিবর্তন আসে তা তুলে ধরা আলোচ্য গল্পের মূল উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশের মানুষ পিঠা খেতে ভালবাসে। আমাদের দেশের গ্রামগুলোতেই পিঠাপুলি বেশি তৈরি হয়। এ দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি পিঠা হল নকশি পিঠা। এ দেশের মেয়েরা নানা রকমের নকশি পিঠা তৈরি করে। সাধারণত বিয়ের উৎসবে নানা রকমের পিঠার আয়োজন করা হয়। এসব পিঠার গায়ে আঁকা থাকে হরেক রকমের নকশা। তাই এই পিঠাকে নকশি পিঠা বলে। খেজুর কাঁটা, মনকাঁটা ও বাঁশের ছিলকা দিয়ে নকশা করা হয়। পিঠার গাঁয়ে এসব নকশা ছবির মত ফুটে ওঠে। ফুল, ফল, চাঁদ, তারা, পাখি, মাছের মত করেও কোন কোন পিঠা তৈরী করা হয়। এছাড়াও নানা রকমের গাছের পাতা, কুড়েঁঘর, ঘুড়ি, পাখা এসবও আঁকা হয় পিঠার গায়ে।
এদেশের নকশি পিঠার নামগুলো ভারি সুন্দর। কোন কোন পিঠার নাম কাজললতা, শঙ্খলতা, সাজনীবাহর, বানভাসি ও মেঘডুমুর। পাতা আকার পিঠার নাম হিজলপাতা, সজনেপাতা, ও মইফুলি। আবার পদ্মদিঘি, সাগরদিঘি, জামাইমুখ, কন্যামুখ, ময়ূর পেখম ও মোকাঝুটি নামের পিঠাও আছে।
********
No comments:
Post a Comment