স্বাভাবিক ভাবে গর্ভাবতী মায়ের শরীর ঘামতে থাকে । কেননা গর্ভাবস্থায় এমিনিতেই মায়দের শরীরে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায় যে কারণে গরম বেশী অনুভূত হয়। তার মধ্যে যদি পরে গরম তাহলে তো আর কথায় নেই । তবে সেক্ষেত্রে ভয়ের কোন কারণ নেই। গর্ভাবস্থায় গরমের কালটা খুব কঠিন বলে মনে হলেও নীচের কিছু টিপস গরমে গর্ভবতী মায়ের যত্ন নিতে সাহায্য করবে ।
১) বেশি বেশি পরিমাণ পানি পান করুন
এই গরমে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয়ে থাকে, তা হল ড্রিহাইড্রেশন বা পানিশূনতা । সেক্ষেক্রে গর্ভাবতী মায়ের অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। যার কারণে আস্তে আস্তে ড্রিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দিয়ে থাকে । তাই এইসময় গর্ভাবতী মায়ের স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি পরিমাণে পানি পান করা খুবই দরকার ।আর এ সময় পানি স্বল্পতা দেখা দিলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। খেয়াল রাখতে হবে এই সময় প্রস্রাব হলুদাভ বর্ণের হয় কিনা,হলে বুঝতে হবে শরীরে পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হয়েছে । প্রস্রাব হলুদাভ বর্ণের হলে সাথে সাথে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে হবে । যতক্ষণ না দেখবেন প্রস্রাবের রঙ স্বাভাবিক হচ্ছে ততক্ষণ যথাসম্ভব পানি পান পান যেতে হবে।
২) শরীর বেশি অসুস্থ লাগলে স্যালাইন পানি পান করাই ভালো ।
এই গরমে পানি ছাড়াও ডাব, জুস, লাচ্ছি, লেবুপানি, দই প্রভৃতি খেতে পারেন । এতে শরীর আর্দ্র থাকবে।
আর যথাসম্ভব রোদ থেকে নিজেকে দুরে রাখুন । গরমে গর্ভবতী মায়ের সরাসরি সূর্যালোকে বেশী সময় না থাকাটায় ভাল । যদি একান্ত থাকতে হয় সূর্যালোকে তবে সানস্ক্রিন লোশন এবং সানগ্লাস ব্যবহার করবেন অবশ্যই । তা না হলে মাথাকে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য ছাতা এবং টুপি ব্যবহার করা যেতে পারে । যতক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকবেন ততক্ষণ যাতে বেশি সময় ছায়ায় থাকাতে পারেন তা চেষ্টা করবেন । পানির স্প্রে বোতল একটা সাথে রাখুন । বেশী গরম বা অস্তির লাগলে মাঝে মাঝে শরীরে হাল্কা পানি স্প্রে করে নিতে পারেন এতে আপনার ভাল লাগবে ।
৩) বেশি বেশি বিশ্রাম নিন
গরমের সময় শরীর খুব তাড়াতাড়িই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই এই সময় বেশি বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে । ঘুম যাতে পর্যাপ্ত হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে । অধিক পরিশ্রম থেকে বিরত রাখুন নিজেকে । নিজেকে রান্না বান্নার কাজ থেকে যতটা সম্ভব দুরে থাকার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে আপনি অন্য কারো সাহায্যও নিন । ঘরের কাজকর্ম যথাসম্ভব ভোরের দিকে সেরে ফেলার চেষ্টা করবেন । কেননা এই সময়টাতে তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা কম থাকে।
৪) গরমে আরামদায়ক বা ঢিলেঢালা পোশাক পড়ুন
এই সময়টাতে গর্ভবতী মায়ের আরামদায়ক, হালকা এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করাই খুব দরকার । কেননা তা শরীরকে আর্দ্র থাকবে ্বাতাস চলাচলে সহায়তা করবে । আর এই সময় সুতি কাপড় পরিধান উপকারী হবে আর্ । কারন সুতি কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না ।কৃত্রিম কাপড় যেমন পলিস্টার এবং সিনথেটিক এসব কাপড় তাপ শোষণের ক্ষমতা বেশি বলে এই সময় তা পরিহার করাই ভাল । বেশি জাঁকজমক পোষাক শরীরে বেশি উত্তাপ করে তোলে । তাই গর্ভাবস্থায় হালকা ঢিলে ঢালা পোষাকই আরামদায়ক সবচেয়ে বেশি। ফ্যাশন করলে করুন হালকা পোষাকেই ।এতে আপনার শরীর ও আরাম পাবে ।
৫) এই সময় নিয়মিত গোসল করুন
গরমকালে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতেও বেশী পরিমাণের থাকে । তাই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রতিদিন গোসল করা খুব্প্রয়োজন । সুযোগ থাকলে অল্প অল্প করে সময় নিয়েও একাধিকবার গোসল করতে পারেন । সবচেয়ে ভাল হয়, রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করে নিলে শরীরের তাপমাত্রা কম থাকবে এবং এতে আপনার শরীর ও আরাম পাবে।
৬) প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন
এই সময় গর্ভবতী মেয়েরা যদি হালকা ব্যায়াম করে তবে তা তাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী । তবে অবশ্যই কি ধরনের ব্যায়াম হলে ভাল হবে তা আগে ডাক্তারের কাছে থেকে জেনে নিলে ভাল হবে । এই সময় গর্ভবতী মায়ের সাঁতার কাটা খুবই উপকারী কেননা এতে শরীরে রক্ত এবং তরল প্রবাহ স্বাভাবিক পরিমাণের থাকে । যদি সাঁতার নাই পারেন তবে পারলে সুইমিং পুলে নেমে হাঁটাহাঁটিও করতে পারেন । এতে শরীরের তাপমাত্রা ঠাণ্ডাও থাকবে আবার ব্যায়ামও হবে।
৭) অল্প অল্প করে বার বার খাওয়া
এই সময় গর্ভবতী মায়ের একবারে বেশি করে না খেয়ে অল্প অল্প করে একটু পর পর খেলে তা শরীর এর জন্য বেশী উপকারী । এতে মায়ের বিপাক প্রক্রিয়ার পর বেশী চাপ পড়ে না সহজেই তার অভ্যন্তরীন পরিপাক ক্রিয়া কাজ করতে পারে ।কিন্তু যদি গর্ভবতী মা একবারে বেশী পরিমানে খেয়ে থাকে তবে তার বিপাক ক্রিয়াতে অধিক মাত্রায় চাপ প্রয়োগ হয় এবং এতে শরীরে অধিক পরিমানে তাপ উৎপাদিত হয় । তাই গর্ভবতী মায়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য এক সাথে অধিক পরিমানে খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে এতে তার উপকারী হবে । উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের পরিবর্তে অল্প অল্প খান।
এই সময় ফলমূল, শাকসবজি ,ডাল,ডিম ,সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার গ্রহন করা খুবই দরকার । আর এ খাবার গুলোতে পাওয়া যেতে পারে ক্যালসিয়াম,আয়রন, প্রোটিন এবং আয়োডিন সমৃদ্ধ পুষ্টিগুন ।গরমের দিনে গর্ভবতী মায়ের চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। চর্বিজাতীয় খাবারে শরীর আরও উত্তাপ লাগে বেশি । বাড়বে ঘাম ও অস্বস্তি দুই-ই । চর্বির সঙ্গে বেশিমাত্রায় চিনিযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলাই শরিরের জন্য স্বস্তিদায়ক । এ সময়টিতে গর্ভবতী মাকে নিয়মিত খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে ফলমূল ও শাকসবজি এতে মা ও শিশু দুই-ই ভাল থাকবে ।
৮) এ সময়ে ক্যাফেইন(চা,কফি) জাতীয় খাবার থেকে পরিহার
সাধারনত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা,কফি রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করে এবং শরীরের মূল তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় । আবার অনেকের ক্ষেত্রে ক্যাফেইন এর জন্য বিরক্তিভাব বাড়তে পারে, উদ্বিগ্নতা জন্মাতে পারে, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে,এমনকি ঘুমের সমস্যাও হতে পারে । তাই গর্ভকালীন সময়ে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহন করা থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে ভাল কেননা তা গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী । ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা,কফি কিভাবে গর্ভের সন্তানের উপর প্রভাব বিস্তার করে খুব দ্রুত । এতে কোন কোন বিজ্ঞানীর মতে --ক্যাফেইন এর জন্যই অপরিপক্ক শিশু অথবা স্বাভাবিক এর চাইতে ছোট শিশু অথবা জন্মগত ত্রুটি নিয়ে শিশু জন্মাতে পারে বলে ধারণা করা গিয়েছে ।সেক্ষেত্রে কেউ যদি এই সময় ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহন করতেও চায়ও তবে তা খুব অল্প পরিমানের করাই ভাল অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহন করা উচিত ।
৯) গর্ভাবস্থায় বাইরের খাবারকে পরিহার করুন
গরমে আর ক্লান্তিতে বাইরের খোলা খাবার ও পানীয় গ্রহণের হার যেন বেড়েই চলছে । তার ওপর গরমে সহজেই খাদ্যদ্রব্য দূষিত হয় সবচেয়ে বেশি । বেড়েই চলছে মাছি ও পোকামাকড়ের বিস্তার, যা রোগবালাই ছড়াতে খুব দ্রুত সাহায্য করে । এসবের কারণেই বেড়েই চলছে পানি ও খাবারবাহিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে সবচেয়ে একটি বড় সমস্যাটি হলো জন্ডিস। তাই জন্ডিস থেকে বাঁচতে, অবশ্যই রাস্তার খোলা মেলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা খুব দরকার ।
১০) গর্ভাবস্থায় মায়ের ঘুম হবে আরামদায়ক এবং ঠাণ্ডা পরিবেশে
যতটা সম্ভব আপনার শোওয়ার ঘর যাতে ঠাণ্ডা, আরামদায়ক এবং বাতাস চলাচলের ব্যাবস্থা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন । বাম পাশ ফিরে ঘুমানোর চেষ্টা করুন । কেননা শরীর ডান পাশে থাকা শিরায় চাপ কম পরে যা শরীরকে নিম্নাংশ থেকে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ করবে। বিছানার চাদর যাতে সুতির কাপড়ের তৈরি হয় সেদিকেও একটু খেয়াল রাখবেন । এতে ঘুমানোর সময় বেশীও গরম লাগবেনা ।
১১) গর্ভাবস্থায় ইডেমা বা শরীরে পানি আসা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীরে পানি আসতে পারে এবং শরীর আরও বেশী ফুলে যেতে পারে । তাই যখনই বিশ্রাম নেবেন বা শুয়ে থাকবেন তখন পায়ের নীচে বালিশ বা আর কিছু দিয়ে পা কে উপরের দিকে তুলে রাখুন। এতে যেমন আপনার রিলাক্স হবে তেমনি এতে শরীরে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্থও হবেনা । সবচাইতে ভালো হয় যদি শুয়ে থাকা অবস্থায় পা আপনার হার্টের চাইতে উপরে রাখা যায়। তবে যেটা আপনার জন্য আরামদায়ক সেটাই আপনি করুন। অতিরিক্ত লবন শরীরে পানি ধরে রাখে । তাই এই সময় অতিরিক্ত লবন খাওয়াকে পরিহার করুন । সোডিয়াম সমৃদ্ধ প্যাকেটজাত খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত সোডিয়াম কমানোর আরেকটি উপায় হোল পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, যেমন- কলা, অ্যাপ্রিকট, কমলা, মিষ্টি আলু, বিট ইত্যাদি। এই অতিরিক্ত গরমে গর্ভবতী মায়ের শরীর আরও বেশী ফুলে যেতে পারে। তাই গরমে এই অবস্থায় বাইরে না যাওয়ার চেষ্টা করুন এবং ঠাণ্ডা এবং আরামদায়ক স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
১২) গর্ভাবস্থায় ত্বকের পিগমেন্টেশন(মুখে, গলায় কালো বা বাদামী যে ছোপ)
এ সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মেলানিন প্রোডাকশন বেড়ে যায়। ত্বকে সৃষ্টি হয় নানা ধরনের পিগমেন্টরি ডিজঅর্ডার । অথ্যাৎ হঠাৎ করে মুখে, গলায় কালো বা বাদামী যে ছোপ দেখা দেয় এর একটি নাম আছে “মাস্ক অফ প্রেগন্যান্সি”। মাস্ক অফ প্রেগনেন্সিকে গর্ভাবস্থায় হতে দেখা যায়।
ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ গ্রহণ করেন যারা তাদের ক্ষেত্রে এটি হতে দেখা যায় বেশি আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্তানের জন্মের ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এ দাগ গুলো চলে ও যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি থেকে যেতে পারে । সেক্ষেত্রে নিয়মিত ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহার বা কেমিক্যাল পিল গ্রহণের মাধ্যমে চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে ।
তাছাড়া ক্লোয়েজমা প্রতিরোধের জন্য সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন বা রোদে বের হলে ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করতে ক্যাপ জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন।
এই সময়টাতে গর্ভবতী মায়ের আরামদায়ক, হালকা এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করাই খুব দরকার । কেননা তা শরীরকে আর্দ্র থাকবে ্বাতাস চলাচলে সহায়তা করবে । আর এই সময় সুতি কাপড় পরিধান উপকারী হবে আর্ । কারন সুতি কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না ।কৃত্রিম কাপড় যেমন পলিস্টার এবং সিনথেটিক এসব কাপড় তাপ শোষণের ক্ষমতা বেশি বলে এই সময় তা পরিহার করাই ভাল । বেশি জাঁকজমক পোষাক শরীরে বেশি উত্তাপ করে তোলে । তাই গর্ভাবস্থায় হালকা ঢিলে ঢালা পোষাকই আরামদায়ক সবচেয়ে বেশি। ফ্যাশন করলে করুন হালকা পোষাকেই ।এতে আপনার শরীর ও আরাম পাবে ।
৫) এই সময় নিয়মিত গোসল করুন
গরমকালে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতেও বেশী পরিমাণের থাকে । তাই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রতিদিন গোসল করা খুব্প্রয়োজন । সুযোগ থাকলে অল্প অল্প করে সময় নিয়েও একাধিকবার গোসল করতে পারেন । সবচেয়ে ভাল হয়, রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করে নিলে শরীরের তাপমাত্রা কম থাকবে এবং এতে আপনার শরীর ও আরাম পাবে।
৬) প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন
এই সময় গর্ভবতী মেয়েরা যদি হালকা ব্যায়াম করে তবে তা তাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী । তবে অবশ্যই কি ধরনের ব্যায়াম হলে ভাল হবে তা আগে ডাক্তারের কাছে থেকে জেনে নিলে ভাল হবে । এই সময় গর্ভবতী মায়ের সাঁতার কাটা খুবই উপকারী কেননা এতে শরীরে রক্ত এবং তরল প্রবাহ স্বাভাবিক পরিমাণের থাকে । যদি সাঁতার নাই পারেন তবে পারলে সুইমিং পুলে নেমে হাঁটাহাঁটিও করতে পারেন । এতে শরীরের তাপমাত্রা ঠাণ্ডাও থাকবে আবার ব্যায়ামও হবে।
৭) অল্প অল্প করে বার বার খাওয়া
এই সময় গর্ভবতী মায়ের একবারে বেশি করে না খেয়ে অল্প অল্প করে একটু পর পর খেলে তা শরীর এর জন্য বেশী উপকারী । এতে মায়ের বিপাক প্রক্রিয়ার পর বেশী চাপ পড়ে না সহজেই তার অভ্যন্তরীন পরিপাক ক্রিয়া কাজ করতে পারে ।কিন্তু যদি গর্ভবতী মা একবারে বেশী পরিমানে খেয়ে থাকে তবে তার বিপাক ক্রিয়াতে অধিক মাত্রায় চাপ প্রয়োগ হয় এবং এতে শরীরে অধিক পরিমানে তাপ উৎপাদিত হয় । তাই গর্ভবতী মায়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য এক সাথে অধিক পরিমানে খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে এতে তার উপকারী হবে । উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের পরিবর্তে অল্প অল্প খান।
এই সময় ফলমূল, শাকসবজি ,ডাল,ডিম ,সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার গ্রহন করা খুবই দরকার । আর এ খাবার গুলোতে পাওয়া যেতে পারে ক্যালসিয়াম,আয়রন, প্রোটিন এবং আয়োডিন সমৃদ্ধ পুষ্টিগুন ।গরমের দিনে গর্ভবতী মায়ের চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। চর্বিজাতীয় খাবারে শরীর আরও উত্তাপ লাগে বেশি । বাড়বে ঘাম ও অস্বস্তি দুই-ই । চর্বির সঙ্গে বেশিমাত্রায় চিনিযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলাই শরিরের জন্য স্বস্তিদায়ক । এ সময়টিতে গর্ভবতী মাকে নিয়মিত খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে ফলমূল ও শাকসবজি এতে মা ও শিশু দুই-ই ভাল থাকবে ।
৮) এ সময়ে ক্যাফেইন(চা,কফি) জাতীয় খাবার থেকে পরিহার
সাধারনত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা,কফি রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করে এবং শরীরের মূল তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় । আবার অনেকের ক্ষেত্রে ক্যাফেইন এর জন্য বিরক্তিভাব বাড়তে পারে, উদ্বিগ্নতা জন্মাতে পারে, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে,এমনকি ঘুমের সমস্যাও হতে পারে । তাই গর্ভকালীন সময়ে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহন করা থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে ভাল কেননা তা গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী । ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা,কফি কিভাবে গর্ভের সন্তানের উপর প্রভাব বিস্তার করে খুব দ্রুত । এতে কোন কোন বিজ্ঞানীর মতে --ক্যাফেইন এর জন্যই অপরিপক্ক শিশু অথবা স্বাভাবিক এর চাইতে ছোট শিশু অথবা জন্মগত ত্রুটি নিয়ে শিশু জন্মাতে পারে বলে ধারণা করা গিয়েছে ।সেক্ষেত্রে কেউ যদি এই সময় ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহন করতেও চায়ও তবে তা খুব অল্প পরিমানের করাই ভাল অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহন করা উচিত ।
৯) গর্ভাবস্থায় বাইরের খাবারকে পরিহার করুন
গরমে আর ক্লান্তিতে বাইরের খোলা খাবার ও পানীয় গ্রহণের হার যেন বেড়েই চলছে । তার ওপর গরমে সহজেই খাদ্যদ্রব্য দূষিত হয় সবচেয়ে বেশি । বেড়েই চলছে মাছি ও পোকামাকড়ের বিস্তার, যা রোগবালাই ছড়াতে খুব দ্রুত সাহায্য করে । এসবের কারণেই বেড়েই চলছে পানি ও খাবারবাহিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে সবচেয়ে একটি বড় সমস্যাটি হলো জন্ডিস। তাই জন্ডিস থেকে বাঁচতে, অবশ্যই রাস্তার খোলা মেলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা খুব দরকার ।
১০) গর্ভাবস্থায় মায়ের ঘুম হবে আরামদায়ক এবং ঠাণ্ডা পরিবেশে
যতটা সম্ভব আপনার শোওয়ার ঘর যাতে ঠাণ্ডা, আরামদায়ক এবং বাতাস চলাচলের ব্যাবস্থা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন । বাম পাশ ফিরে ঘুমানোর চেষ্টা করুন । কেননা শরীর ডান পাশে থাকা শিরায় চাপ কম পরে যা শরীরকে নিম্নাংশ থেকে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ করবে। বিছানার চাদর যাতে সুতির কাপড়ের তৈরি হয় সেদিকেও একটু খেয়াল রাখবেন । এতে ঘুমানোর সময় বেশীও গরম লাগবেনা ।
১১) গর্ভাবস্থায় ইডেমা বা শরীরে পানি আসা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীরে পানি আসতে পারে এবং শরীর আরও বেশী ফুলে যেতে পারে । তাই যখনই বিশ্রাম নেবেন বা শুয়ে থাকবেন তখন পায়ের নীচে বালিশ বা আর কিছু দিয়ে পা কে উপরের দিকে তুলে রাখুন। এতে যেমন আপনার রিলাক্স হবে তেমনি এতে শরীরে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্থও হবেনা । সবচাইতে ভালো হয় যদি শুয়ে থাকা অবস্থায় পা আপনার হার্টের চাইতে উপরে রাখা যায়। তবে যেটা আপনার জন্য আরামদায়ক সেটাই আপনি করুন। অতিরিক্ত লবন শরীরে পানি ধরে রাখে । তাই এই সময় অতিরিক্ত লবন খাওয়াকে পরিহার করুন । সোডিয়াম সমৃদ্ধ প্যাকেটজাত খাবার না খাওয়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত সোডিয়াম কমানোর আরেকটি উপায় হোল পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, যেমন- কলা, অ্যাপ্রিকট, কমলা, মিষ্টি আলু, বিট ইত্যাদি। এই অতিরিক্ত গরমে গর্ভবতী মায়ের শরীর আরও বেশী ফুলে যেতে পারে। তাই গরমে এই অবস্থায় বাইরে না যাওয়ার চেষ্টা করুন এবং ঠাণ্ডা এবং আরামদায়ক স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
১২) গর্ভাবস্থায় ত্বকের পিগমেন্টেশন(মুখে, গলায় কালো বা বাদামী যে ছোপ)
এ সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মেলানিন প্রোডাকশন বেড়ে যায়। ত্বকে সৃষ্টি হয় নানা ধরনের পিগমেন্টরি ডিজঅর্ডার । অথ্যাৎ হঠাৎ করে মুখে, গলায় কালো বা বাদামী যে ছোপ দেখা দেয় এর একটি নাম আছে “মাস্ক অফ প্রেগন্যান্সি”। মাস্ক অফ প্রেগনেন্সিকে গর্ভাবস্থায় হতে দেখা যায়।
ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ গ্রহণ করেন যারা তাদের ক্ষেত্রে এটি হতে দেখা যায় বেশি আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্তানের জন্মের ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এ দাগ গুলো চলে ও যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি থেকে যেতে পারে । সেক্ষেত্রে নিয়মিত ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহার বা কেমিক্যাল পিল গ্রহণের মাধ্যমে চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে ।
তাছাড়া ক্লোয়েজমা প্রতিরোধের জন্য সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন বা রোদে বের হলে ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করতে ক্যাপ জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন।
১৩) গরমে গর্ভাবস্থায় চুলকানি
গরমের কারণে বেশি মাত্রায় চুলকানি বাড়তে পারে। এই গরমে চুলকানি রোধের জন্য ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরা আরামদায়ক, যার কারণে আপনার জামাকাপড় আপনার ত্বকের সঙ্গে কম ঘর্ষণের সম্ভাবনা থাকে এবং এতে চুলকানিও কম হবে । এছাড়াও আপনি সিনথেটিক কাপড় ব্যবহার এড়িয়ে প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি যেমন সুতি কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো শ্বাস প্রশ্বাস বান্ধব হয় এবং আপনার ত্বকের কাছে বাতাসে চলাচল করতে পারে।
চুলকানির সাথে ঠাণ্ডা পানির দা-কুমড়া সম্পর্ক। যে স্থানে চুলকানির সমস্যা আছে সেখানে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুতে থাকবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে চুলকানি কমে যাবে। চুলকানির জায়গায় আইস প্যাক বা ঠাণ্ডা পানিতে চুবানো কাপড় ৫-১০ মিনিট বা চুলকানি কমা পর্যন্ত দিয়ে রাখতে পারেন।
ত্বক আদ্র রাখতে ময়শ্চারাইজার ব্যাবহার করতে পারে। এগুলো সুগন্ধিযুক্ত না হলেই ভালো। একজিমা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শকৃত ক্রীম বা লোশন ব্যাবহার করতে হবে। যদি মনে হয় আপনি ঘুমের মধ্যে চুল্কাচ্ছেন তবে ঘুমানোর সময় হাতে কটনের হাত মোজা পরে নিতে পারেন।
১৪) গরমে গর্ভাবস্থায় ঘামাচি
গ্রীষ্মের অতিরিক্ত গরমে ঘামাচির সমস্যা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে । তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত গরমেই প্রচুর পানি পান করাটা খুবই প্রয়োজন । প্রতিদিন কমপক্ষে অন্তত ২ বার গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত একবার গোসলের সময় সাবান ব্যবহার করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে ।
ঘামাচি সাধারণত বেশী হয় শরীরের ভাজে, যেমন স্তনের নীচে, দুই রানের সন্ধিস্থলে । এগুলো প্রতিরোধের জন্য গোসলের পর ওইসব জায়গা ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে এবং পাতলা সুতি কাপড় পড়তে হবে যেগুলো শরীরের সাথে লেগে থাকবেনা।
লম্বা গরমকালের কারণে গর্ভাবস্থায় আপনি কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। কেননা একটু অসাবধানতার কারণে এটি আপনার এবং আপনার অনাগত শিশুর বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই গরমের সময় আপনি প্রেগন্যান্ট থাকলে অবশ্যই নিজের আলাদা যত্ন নেবেন।
গরমের কারণে বেশি মাত্রায় চুলকানি বাড়তে পারে। এই গরমে চুলকানি রোধের জন্য ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরা আরামদায়ক, যার কারণে আপনার জামাকাপড় আপনার ত্বকের সঙ্গে কম ঘর্ষণের সম্ভাবনা থাকে এবং এতে চুলকানিও কম হবে । এছাড়াও আপনি সিনথেটিক কাপড় ব্যবহার এড়িয়ে প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি যেমন সুতি কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো শ্বাস প্রশ্বাস বান্ধব হয় এবং আপনার ত্বকের কাছে বাতাসে চলাচল করতে পারে।
চুলকানির সাথে ঠাণ্ডা পানির দা-কুমড়া সম্পর্ক। যে স্থানে চুলকানির সমস্যা আছে সেখানে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুতে থাকবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে চুলকানি কমে যাবে। চুলকানির জায়গায় আইস প্যাক বা ঠাণ্ডা পানিতে চুবানো কাপড় ৫-১০ মিনিট বা চুলকানি কমা পর্যন্ত দিয়ে রাখতে পারেন।
ত্বক আদ্র রাখতে ময়শ্চারাইজার ব্যাবহার করতে পারে। এগুলো সুগন্ধিযুক্ত না হলেই ভালো। একজিমা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শকৃত ক্রীম বা লোশন ব্যাবহার করতে হবে। যদি মনে হয় আপনি ঘুমের মধ্যে চুল্কাচ্ছেন তবে ঘুমানোর সময় হাতে কটনের হাত মোজা পরে নিতে পারেন।
১৪) গরমে গর্ভাবস্থায় ঘামাচি
গ্রীষ্মের অতিরিক্ত গরমে ঘামাচির সমস্যা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে । তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত গরমেই প্রচুর পানি পান করাটা খুবই প্রয়োজন । প্রতিদিন কমপক্ষে অন্তত ২ বার গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত একবার গোসলের সময় সাবান ব্যবহার করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে ।
ঘামাচি সাধারণত বেশী হয় শরীরের ভাজে, যেমন স্তনের নীচে, দুই রানের সন্ধিস্থলে । এগুলো প্রতিরোধের জন্য গোসলের পর ওইসব জায়গা ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে এবং পাতলা সুতি কাপড় পড়তে হবে যেগুলো শরীরের সাথে লেগে থাকবেনা।
লম্বা গরমকালের কারণে গর্ভাবস্থায় আপনি কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। কেননা একটু অসাবধানতার কারণে এটি আপনার এবং আপনার অনাগত শিশুর বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই গরমের সময় আপনি প্রেগন্যান্ট থাকলে অবশ্যই নিজের আলাদা যত্ন নেবেন।
ভালো থাকুক পৃথিবীর অনাগত সকল শিশুরা, ভালো থাকুন সকল গর্ভবতী মায়েরা।
আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com
No comments:
Post a Comment