Breaking

Saturday, May 18, 2019

স্মার্ট পুরুষ ঘরের কাজও করেন

আধুনিক যুগে একজন স্মার্ট মানুষ, তিনি পুরুষ হন বা নারীই হোন, তিনি কোনো কাজকেই হেয় মনে করেন না, ভয় পান না। স্মার্ট নারীরা যেমন রকেট চালাতে পারদর্শী হয়, ঠিক তেমনি একজন স্মার্ট পুরুষ ঘরের কাজ করতে সক্ষম হবেন । একজন স্মার্ট পুরুষ তাঁর পেশাগত কাজের পাশাপাশি ঘরের কাজেও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ভাগ করে নেবেন । ঘরের প্রতিটি কাজে যেমন-- রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা আর সন্তান লালন-পালনে অংশ নেওয়া ইত্যাদি কাজে সাহায্য করবেন। এতে করে দাম্পত্য সম্পর্ক হয় সুদৃঢ়, এমনটিই প্রমাণিত হয়েছে রুয়ান্ডায় পরিচালিত একটি গবেষণাতে ।


‘রান্নাবান্না কি ছেলেদের কাজ?’
‘আমি টাকা রোজগার করি, ঘরের কাজটাজ কিছু করতে পারব না’ কিংবা ‘বাচ্চাদের দেখা শোনার দায়িত্ব আমার না, আমাকে অফিস করতে হয়, হাজারটা মানুষের কথা ভাবতে হয়’। এ রকমই বেশ গর্বের সঙ্গেই কথা বলেন অনেক পুরুষই । মনের মধ্যে একটা বিশ্বাস ভাবনা থাকে —ঘরের কাজের সব দায়িত্ব বাড়ির নারীর। পুরুষেরা মনে করেন অর্থ উপার্জন করেই তাঁরা পরিবারে যে অবদান রাখছেন, সেটাই যথেষ্ট।

ঘরের কাজ? সেটা করবে বাড়ির মেয়ে-বউরা । গবেষণায় দেখা যায়, যেসব পুরুষ ঘরের কাজে তাদের স্ত্রীদের সাহায্য করে, তারা অনেকবেশি রোমান্টিক হয় এবং তাদের দাম্পত্যজীবনও সুখের হয়! আজকাল ঘরের কাজ করতে চায় না, এমন মানসিকতার পুরুষদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে । বিশেষ করে পুরুষরা সাংসারিক কাজে আগের চেয়ে অনেক বেশি সাহায্য করছে নারীদের । পুরুষরা সচরাচর- রান্না করা, বাসন পরিষ্কার বা কাপড় কাচা একেবারেই পছ্ন্দ করে না বললেই চলে । কিন্তু তারাই এখন এই ধরনের কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে, কেননা তারা দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে চায় ।

অপর দিকে দাম্পত্য সম্পর্ক, সামাজিক দক্ষতা আর সন্তান লালন–পালনের প্রশ্নেও ঘরের কাজে পুরুষের অংশগ্রহণ জরুরি । কোনো কোনো সময় বিষয়টি আবার শুধু পুরুষ সঙ্গীর ওপর নির্ভর করে না । বাড়ির নারী নিজেও একটা ভ্রান্তির মধ্যে থাকেন এবং বিশ্বাস করেন যে ঘরের কাজে পুরুষ একবারেই অপাঙ্ক্তেয়। এটাও একধরনের ‘অবজারভেশনাল লার্নিং’। পরিবারে বিষয়টির চর্চা না থাকায় পুরুষদের যে ঘরের কাজ করতে হবে এবং করাটাই যে আধুনিকতা, সেই বোধটি তৈরি হয় না ।
একজন নারী সারাদিন ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকতে থাকতে তাঁর অন্যান্য কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলছে । কিন্তু নারীরা যখন কর্মমুখী হওয়া শুরু করলেন , সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে চর্চা বেড়ে যাচ্ছে দিন কে দিন । অর্থাৎ বাড়িতে রান্না করার হার কমে যায় বলেই ফাস্ট ফুডের প্রসার ঘটে । আরেক গবেষণায় দেখা যায় কানাডায় নারীরা ঘরের কাজে নিজেদের সময়কে কমিয়ে দিচ্ছে আর পুরুষেরা ঘরের কাজে নিজেদের অংশগ্রহণ বাড়াচ্ছেন বিশেষ করে সন্তান পালনে পুরুষেরা আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় দেওয়া শুরু করে । এতে করে সংসারে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বাড়তে থাকে।

ঘরের কাজ করাকে একটি নৈমিত্তিক বিষয় হিসেবে মনে করুন । একদিন ঘরের কাজে অংশ নিয়েই ফলাও করে প্রচারের কিছু নেই।। কতটুকু কাজ করলেন, এটি নিয়ে হিসাব–নিকাশ করবেন না।। কাজের বেলায় ‘পুরুষের কাজ’ বা ‘নারীর কাজ’ বলে ভাগ করা চলবে না । এতে দাম্পত্য সম্পর্ক মজবুত হয়। আধুনিক যুগে একজন স্মার্ট মানুষ তিনি পুরুষ হন বা নারীই—তিনি কোনো কাজকেই হেয় মনে করবেন না, ভয়ও পাবেন না।


এ ছাড়া ঘরের কাজে যদি বাবা-মাকে একসঙ্গে কাজ করতে দেখে তখন শিশুর মানসিক বিকাশ অনেক সুষম হয়—তার কগনিটিভি ডেভেলপমেন্ট সফলভাবে ঘটতে থাকে। এবং শিশুর মধ্যেও অপরের প্রতি সম্মানবোধ তৈরি হয় । সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি হয় এবং পরিণত বয়স হতে না হতে শিশু–ও পরিবারের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করে তুলতে চেষ্টা করেন ।

নিজেকে নতুন শতকের যোগ্য স্মার্ট পুরুষ হিসেবে প্রমাণ করতে হলে নিজেকে ঘরের কাজে পারদর্শী করে তুলুন, নারীর সঙ্গে সমানতালে ঘরের কাজ সাহায্য করুন ।

কীভাবে ঘরের কাজে নিজে অংশগ্রহন করবেন
* পরিবারের নারীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঘরের কোন কাজটি কতটুকু করবেন, সেটি ঠিক করুন।
* পরিবারের শিশুদেরও ঘরের কাজে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন।
* এটা কখনোই মনে করবেন না যে আপনি ঘরের কাজ করে আপনার পরিবারের নারী সদস্যকে সাহায্য করছেন; বরং এটা ভাবুন যে আপনাদের ঘরের কাজগুলো আপনারা দুজনেই করছেন ।
* দাম্পত্যে ভারসাম্য আনতে পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুজনের কাজকর্মে সুষম হতে হবে।
*  পরস্পরের সম্পর্কের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধ থাকতে হবে।
* ঘরের কাজগুলোকে আরো সহজ করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করতে পারেন—উন্নত চুলা, ঘর পরিষ্কারক ইত্যাদির ব্যবহার ঘরের কাজ আরো সহজ মনে হবে ।
* বাড়িতে গৃহস্থালির কাজগুলো করতে গিয়ে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থার দিকে মনোযোগী হোন ।
*  ঘরের কাজের জন্য আপনার কর্মক্ষেত্রকে অজুহাত হিসেবে নেবেন না, আপনি পুরুষ বা নারী যে–ই হোন না কেন।
* ঘরে-বাইরে সমানভাবে স্মার্ট হোন। কর্মক্ষেত্রে আপনি যতটুকু দক্ষতা দেখাচ্ছেন, ঘরের কাজেও সেই পরিমাণের দক্ষতা দেখাতে চেষ্টা করুন।
* গৃহস্থালির কোন কাজকে উপেক্ষা বা হেয় করবেন না। আপনার কোনো বন্ধু বা স্বজন এ ধরনের কাজ করতে থাকলে তাঁকে বিদ্রূপ করবেন না।

আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source: www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky