অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটি সত্য। অসামান্য এক সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছেন এক বাংলাদেশি নারী। ঘটনাটি ঘটে গত ০২ মার্চ ২০১৯ শনিবার বিকেলে ঢাকার হাতিরঝিলে। ঢাকার দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত আছেন সালমা খাতুন। তিনি শনিবার বিকেলে রিকশায় করে রাজধানীর হাতিরঝিল দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ছিনতাইকারী তার গলার চেইন ও লকেট টান দিয়ে দৌড় দেয়। তিনিও দমবার পাত্র নন। এক কিলোমিটার দৌড়ে ছিনতাইকারীকে ধরে সাহসিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন এই নারী। তাঁর এই সাহসিকতার গল্প ঘুরছেে এখন সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
সালমা খাতুন জানান, তিনি শনিবার বিকেলে যাচ্ছিলেন রিকশায় করে রাজধানীর হাতিরঝিল দিয়ে । হঠাৎ ওখানে যানজটে বসে থাকার এক মুহূর্তে তাঁর গলায় থাকা লকেট ও স্বর্ণের চেইনটি ছিঁড়ে নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল ছিনতাইকারী। তিনি ও বসে না থেকে সাহস করে ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করেছিলেন। শাড়ি পরা অবস্থায়ই ছুটতে থাকেন, অন্তত এক কিলোমিটার দৌড়ান ছিনতাইকারীর সাথে। শেষ মূহূর্তে ধরে ফেলেন ছিনতাইকারীকে। উদ্ধার করতে সক্ষম হন তাঁর চেইনটি। তবে পুরো অংশটি উদ্ধার করতে পারেননি, কেননা ছিনতাইয়ের সময় লকেটসহ চেইনটি টুকুরো হয়ে যায়। পরে পুলিশের সাহায্য নেন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে । ছিনতাইকারীকে হাতে নাতে ধরিয়ে দেন সালমা খাতুন।
সালমা খাতুন জাতীর উদ্দেশে বলেন, নারী-পুরুষ ভেদে সাহসিকতার ভিন্ন সংজ্ঞা নেই কোন। যে কোনো অপরাধে মানুষ পুলিশ আসার অপেক্ষায় না থেকে সাহস করে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে নিজেরাই, তাহলে সেটিই বহু সমস্যার সমাধান দিতে পারে সফলতার সাথে। একজন নারীর সাহসিকতা দেখে ১০ জন নারী এমন কি এগিয়ে আসবে পুরুষ সমাজও। সবাই প্রেরণা পাবে সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। আমার এ কর্মকাণ্ড দেখে আশেপাশে থাকা আরো ১৫ থেকে ২০ জন নারী এগিয়ে এসে আমাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। আমার মনে হল তারা এ ঘটনা দেখে প্রেরণা পেয়েছেন সাহসের সাথে অপরাধ মোকাবিলা করার।
হ্যা, এ ধরণের ঘটনা শুধু নাটক কিংবা সিনেমায় দেখা যেত, যা এখন বাস্তবে করে দেখিয়েছেন সালমা খাতুন। তিনি সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছেন এখানে। তিনি ভয় পাননি অপরাধ জগতকে, বসে থাকেননি অন্য কারো বা পুলিশের সাহায্যের আশায়। নিজে একাই লড়েছে ছিনতাইকারী সাথে। এই ঘটনায় সকলেই প্রেরণা পেয়েছেন সাহসের সাথে অপরাধ মোকাবিলা করার।
অনেক অনেক শুভ কামনা রইল বাংলার সকল সাহসী সুসন্তানদের জন্য।
No comments:
Post a Comment