টার্কি মুরগী লালন পালন - লিটার বর্ণ ডিজেজ - পর্ব-০৫
লিটার বর্ণ ডিজেজ কক্সিডিউসিস এবং লিটার বর্ণ ডিজেজের যে রোগগুলো মূলতঃ লিটারের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে, এ রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি রোগ কক্সিডিওসিস। কক্সিডিওসিস রোগ বিস্তারে লিটারের ভূমিকা ও প্রতিকারের উপায় নিয়ে আজকের পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কক্সিডিওসিস রোগ বিস্তারে লিটারের ভূমিকাঃ
কক্সিডিওসিস রোগটি আমাদের দেশে স্থায়ী রোগ (ঊহফরসরপ) হয়ে গেছে। তই এই রোগটি প্রতিরোধে প্রায় সকল ফিড কোম্পানীই তাদের ফিডে কক্সিডিওস্যাট ব্যবহার করে। এই কক্সিডিওস্যাট হলো কক্সিও জীবানুর বংশ বৃদ্ধি রোধ করা।
কক্সিওসাইট মূলতঃ লিটারে জন্ম নেয়। যখন লিটার আর্দ্র থাকে অর্থাৎ জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ২৫% এর বেশী থাকে তখন কক্সির জীবানু তার জীবনচক্র সম্পন্ন করে এবং বংশবৃদ্ধি করে । যদি কোন কারণে টার্কি কক্সিওসাইটগুলো খেয়ে থাকে, তবে টার্কিতে কক্সিওসিস হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এখানে বলে রাখা ভাল, অল্প পরিমাণ কক্সিওসাইট খেলে কক্সির বিপক্ষে টার্কির শরীরে ইমিউনিটি (ওসসঁহরঃু) তৈরী হয় কিন্তু অনেক বেশী পরিমাণ ওসাইট খেয়ে ফেললে তখন কক্সিওসিস রোগ প্রকট আকারে দেখা দেয়। টার্কি খাবার ছিটায় ও লিটারে পড়ে থাকা খাদ্য পূণরায় খেয়ে ফেলে।
লিটার থেকে খাদ্য তুলে খাবার কারণে লিটারে অবস্থিত কক্সিওসাইটও পেটে চলে যায় এবং রোগ তৈরী করে। অনেক সময় টার্কির খাদ্য ও পানিতে লিটার পড়ে এবং এ লিটার দ্বারা দূষিত খাদ্য ও পানি খাবার ফলেও টার্কির পেটে কক্সির ওসাইট যেতে পারে এবং কক্সিওসিস রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
কক্সিডিওসিস প্রতিকারে করণীয়ঃ
এক. লিটার আর্দ্র হতে দেয়া যাবে না। লিটার ১৫% - ২০% এর মাঝে রাখতে হবে। লিটার যেন দলা পাকিয়ে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে এবং নিয়মিত লিটার নেড়ে চেড়ে দিতে হবে।
দুই. একই ফ্লকের ক্ষেত্রে লিটার ভিজে গেলে পুরো লিটার ফেলে নতুন লিটার না দিয়ে পুরাতন ও নতুন লিটার ৫০% - ৫০% অনুপাতে মিশিয়ে দিতে হবে।
তিন. লিটার অত্যাধিক ভিজে গেলে ১০ কেজি পাথর চুন ১০০০ বর্গফুট লিটারে ভাল মত মিশিয়ে দিতে হবে। এতে লিটারে বিদ্যমাণ কক্সিওসাইট ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায়। বাতাসে অত্যাধিক আর্দ্রতা থাকলে পাথর চুন ব্যবহার করা উচিত হবে না।
চার. খাবার পাত্র ও পানির পাত্র অবশ্যই প্লাষ্টিকের রশি দিয়ে সঠিক নিয়মে ঝুলিয়ে দিতে হবে। তাহলে খাদ্য ও পানির লিটার টার্কির পায়খানা দিয়ে দূষিত হবার সম্ভাবনা থাকবে না।
পাঁচ. ব্রুডিং পেপারের উপর খাবার দেয়া যাবে না।
ছয়. অত্যাধিক ঘন করে টার্কি পালন করলে কক্সিওসিস হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দেখা গেছে, অধিক ঘন করে টার্কি পালন করলে সে ফ্লকে দ্রুত কক্সিওসিস দেখা দেয়, তাই খামারে সঠিক ফ্লোর স্পেস মেনে টার্কি তোলা উচিত।
সাত. লিটার অত্যাধিক শুকনা হলে বাসস্থানের ভিতর ধুলা বালি উড়তে থাকবে, যা থেকে টার্কির ঠান্ডা লেগে যাবে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে লিটারে পানি দ্বারা স্প্রে করে ধুলাবালি রোধ করতে হবে।
লিটার হলো টার্কির বিছানা, একে যত ভাল রাখবেন, আপনার টার্কি তত ভাল থাকবে।
লিটারের মাধ্যমে যে যে সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ
১. কক্সিডিওসিস
২. এস্পারজিলোসিস
৩. এন্টারাইটিস
৪. এসাইটিস
৫. এমোনিয়া বার্ন অন আই এন্ডট্রাকিয়া
৬. প্যারাসাইটিক্স ইনাস্ট্রেশন
৭. রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস
৮. কলিব্যাসিলোসিস
৯. কোল্ড
১০. স্প্রেডিং অব ভাইরাল জার্ম ইত্যাদি।
আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।Image Source www.google.com
No comments:
Post a Comment