পরিচিত কিছু সবজির গুনাগুন- যা জানলে নিশ্চয়ই অবাক হবেন
ঢেড়শ ( Lady's Finger)
১। ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
২। রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে ।
৩। রোগ-প্রতিরোধ খমতা বাড়ায়।
৪। হাড় মজবুত রাখে।
ঢেড়স গ্রীষ্মকালীন জনপ্রিয় সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সবজি। ঢেঁড়শের সংস্কৃত নাম রোমশ। নারীদের সুডৌল আংগুলের মতো দেখতে বলে এর আকৃতি রসিক জনেরা একে ইংরেজীতে Lady's Finger-ও বলে থাকেন। একথা সবাই জানেন, বিশেষ করে রাধুঁনারী-তো অবশ্যই জানেন যে, ঢেড়স সেদ্ধ আর ভাজি দুই ভাবেই খাওয়া যায়। মাছের সাথে তরকারী হিসেবেও রান্না করা যায়। আবার কচি ঢেড়স ভালো করে শুকিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
করলা (Balsam Apple)
তিতা স্বাদ মিষ্টি হাসি। নিয়মিত করলার উপকারিতা আপনি জানেন কী? স্বাদে তেতো হলে কি হবে? করলার জনপ্রিয়তা মোটেই কম নয় মানুষের কাছে। খাবার পাতে করলা রাখতে পছন্দ করেন বেশিরভাগ মানুষই। করলায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট আছে। যা আমাদের শরীর থেকে নানা ধরণের অসুখ দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত করলা রক্ত পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে। সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন যদি ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে এক গ্লাস করলার রস খেতে পারেন। আপনার শরীর থেকে সব টক্সিন বের করতে সাহায্য করবে এই জুস, ফলে ত্বক আর চুল হয়ে উঠবে ঝকঝকে উজ্জ্বল। দীর্ঘদিন ধরে ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১। উচ্চ রক্তচাপ ও চর্বি কমায়।
২। মাথা ব্যথা কমায়।
৩। কৃমি নাশক হিসেবে কাজ করে।
৪। দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে।
৫। তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
লাউ (Bottle Gourd)
গ্রীষ্ম ও বর্ষা ঋতুর সবজি লাউ। শীতকালেও লাউ উৎপাদিত হয়ে থাকে। শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে লাউ অন্যতম। ইংরেজীতে লাউ Gourd নামে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম লাজেনারিয়াস। রক্তচাপে রোগীর পক্ষে খুবই উপকারী লাউ, কেননা এতে বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। লাউ ভেষজ গুণসম্পন্ন সবজিগুলোর মধ্যে একটি। গরমকালে লাউ খেলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে ও দেহে পানির ঘাটতিও মেটায়। লাউ বলকারক সবজি। আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অর্শ রোগীদের জন্যও লাউ অনেক উপকারী। এর পাতা সরল ও একান্তর, বোঁটা লম্বা এবং ভেতরে ফাঁপা থাকে। আমাদের দেশে অনেক ধরনেরই লাউ চোখে পড়ে। ফলের আকার-আকৃতি ও বর্ণের কারণে বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। বর্তমানে সারাবছরই এ সবজিটি পাওয়া যায়। এর ব্যবহার হয় অনেক ধরনের খাবারেও।
১। দেহের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে
২। উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
৩। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
৪। রাতের ঘুম ভালো হয়।
৫। প্রচুর পরিমান ভিটামিন এ, বি ও সি রয়েছে।
বেগুন (Brinjal)
মৌসুমি সবজি বেগুন। সহজলভ্য ও সারা বছর মেলে এ সবজি। শীতের সময়ে বেগুন বেশি পাওয়া যায়। অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি বেগুন। মধ্য যুগে ইউরোপে যেসব বেগুন পাওয়া যেত সেগুলোর আকৃতি ছিল অনেকটাই মুরগির ডিমের মতো । এ কারণেই বোধহয় ইংরেজিতে বেগুনের নাম এগপ্ল্যান্ট। খোসাসহ বেগুন অনেক সময় তেতো লাগে। এর বয়সকাল অর্থাৎ খুব বড় হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়। তাই বেগুন তাজা, টাটকা এবং কচি খাওয়া ভালো। এতে পুষ্টিগুণ ও স্বাদ দুটোই ঠিক ঠাক থাকে। বেগুনের ত্বক পুষ্টি উপাদানেরও একটি ভালো উৎস। তাই বেগুনের খোসা ছাড়িয়ে রান্না করা উচিত নয়। বেগুনে রয়েছে নানা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। বেগুনে Flavedon, Kolinergik এসিড নামে এক ধরনের এসিড রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশকৃত রোগ জীবাণু, টিউমারের জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার আঁশ-জাতীয় খাদ্য উপাদান। যা বদহজম দূর করে। বেগুন আরো রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, শর্করা, চর্বি, আমিষ, আয়রন। বেগুন এর উদ্ভিজ্জ আমিষ শরীরের হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত রাখে।
১। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
২। মস্তিস্ক ভালো রাখে।
৩। হৃদরোগের ঝুকি কমায়।
৪। ত্বক ভালো রাখে।
কচুর লতি
কচুর লতি দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশে রফতানি হচ্ছে। অন্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এ চাষ বাড়ছে। কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিচ্ছে কচুর লতি চাষ । অল্প সময়ে কচুর লতি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কচুর লতি কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রোলিয়া, ইংল্যান্ড, কানাডা, জার্মানি, ডেনর্মাক, সুইডেন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ প্রায় ২৫টি দেশে রফতানি হচ্ছে। ফলে এ অর্থকারী ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে দারুণ অবদান রাখছে।
১। রক্ত শুণ্যতা দুর করে।
২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৩। মস্তিস্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৪। ত্বক ও চুল ভালো রাখে।
বিট
বিটের খ্যাতি তার সুন্দর রঙের জন্য। বিটে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, নাইট্রেট রয়েছে। শরীরকে সুস্থ রাখার নানা উপাদান থাকায় শীতের সবজি হিসেবে বিট খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। মাটির তলার সবজিটির কথা মনে পড়লেই চোখে ভাসে তার ডিপ গোলাপি রংটি। রান্নায় এক টুকরো বিট দিলে পদটি বিটের রং নিয়ে নেয়। শরীর ফিট বা সুন্দর রাখতে চাইলে খাদ্য তালিকায় বিট রাখতে পারেন। যাঁরা এই শীতেও সুন্দর ও সতেজ ত্বক চান, তাঁদের জন্য সেরা শীতের সবজিটি হবে এই বিট। শরীরে ক্ষতিকর উপাদান বা বিষমুক্ত করার বিশেষ উপাদান আছে বিটে। বিট পছন্দ করুন বা না করুন এর পুষ্টিগুণ কিন্তু রয়েছে অনেক।
১। রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়।
২। হৃৎপিন্ড ভালো রাখে।
৩। যকৃত ভালো রাখে।
৪। হাড় ও দাঁত ভালো রাখে।
শালগম (Turnip)
শীতকালীন একটি সবজি শালগম। খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার শালগম। এটি তরকারি হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। শালগমে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন-ই আর ভিটামিন-কে। শালগমে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম থাকায় নিয়মিত শালগম খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বিভিন্ন রঙের এই সবজি প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে অনেকেই জানেন না কী কী উপকার হয় শালগম খেলে? কেন শালগম খাওয়া উচিত? সে সম্পর্কে জেনে নিন।
শালগমের পুষ্টিগুণ:- শালগমে রয়েছে ভিটামিন সি, ই কে। এছাড়াও শালগমে ক্যালরির পরিমাণ থাকে খুবই কম। শালগম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শালগম খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারি। শালগম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ২০১৩ সালে ব্রিটিশ এক গবেষণা থেকে জানা যায়, শালগম রক্তচাপ কমাতে দ্রুত গতিতে সাহায্য করে। শালগমে পটাশিয়াম রয়েছে বলে ধমনীকে প্রশস্ত করে ও শরীর থেকে সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে।
১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২। রক্ত স্বল্পতা দুর করে।
৩। ত্বকের রূক্ষতা দুর করে।
৪। শারিরীক দুর্বলতা দুর করে।
সাজনে পাতা
আমাদের আশে পাশে অনেক জিনিস আছে যার গুনাগুণ সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা নেই আমাদের। এরই মধ্যে একটি হলো সজনে পাতা। বলা হয় সাজনে পাতায় ৩০০ টি রোগের প্রতিষেধক আছে। সজনে ডাটার গুনাগুণ সম্পর্কে কম বেশি সবাই জানলেও, সজনে পাতা সম্পর্কে জানেন না অনেকেই। আমরা অনেকেই সাজনে খাই সবজি হিসেবে। কিন্তু এখনো অনেকেই জানেন না যে, সজনের সাথে সাথে খাওয়া যায় সজনে পাতাও ।
এই সজনে পাতার আছে বহু রকমের ব্যবহার।
১। লেবুর চেয়ে ৭ গুন বেশি ভিটামিন সি আছে।
২। দুধের চেয়ে ৪ গুন বেশি ক্যালসিয়াম ও ২ গুন বেশি আমিষ আছে।
৩। কলার চেয়ে ৩ গুন বেশি পটাশিয়াম আছে।
Image Source www.google.com আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
No comments:
Post a Comment