টার্কি মুরগী লালন পালন - ব্রুডিং এর ব্যবস্থাপনা এবং বাচ্চাদের উত্তম পরিচর্যা - পর্ব- ০৪
এক. প্রথম দিন হতে ৯৭-৯৮ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় একটানা তিন দিন তাপ দিতে হবে এবং চতুর্থ দিন থেকে প্রতিদিন ০.৭১ ডিগ্রী ফারেনহাইট করে তাপমাত্রা কমাতে হবে এবং ব্রুডারের তাপ ২৪ ঘন্টা চলতে থাকবে। কোন কারণে বিদ্যুত না থাকলে প্রতিটি ব্রুডারে কয়লার চুলা বা কাঠের ভুষির চুলা দিয়ে তাপ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রীষ্মকালে ১/২ সপ্তাহ পর চিকগার্ড উচিয়ে ফেলা যেতে পারে। তবে এটা নির্ভর করবে ভিতরের তাপমাত্রার উপর।
দুই. দৈনিক ৩-৪ বার পেপার পরিবর্তন করে দিতে হবে এবং যদি পেপার ভিঁজে যায়, তাহলে পাল্টিয়ে নতুন পেপার নিয়মানুসারে বিছিয়ে দিতে হবে। পেপার (৩) তিন দিন ব্যবহার করতে হবে এবং তিন দিন পর পেপারের প্রয়োজন নেই।
তিন. দুই ঘন্টা পর পর খাবার ট্রে / ফিডার পরিস্কার করে নতুন কিছু পরিমাণ খাবার পুরাতন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে দিতে হবে এবং ৪ ঘন্টা পর পর পানি পরিবর্তন করে দিতে হবে। পরীক্ষা করে দেখতে হবে বাচ্চাগুলোর পেটে খাবার ও পানি পর্যাপ্ত পরিমানে আছে কি না।
পরীক্ষা পদ্ধতিঃ বাচ্চাগুলোর পেটে আঙ্গুল দিয়ে আলতোভাবে চাপ দিয়ে বুঝতে হবে। যদি কোন বাচ্চার পেটে খাবার ও পানি না থাকে অর্থাৎ পেট খালি থাকে, তাদেরকে আলাদা করে হাতে ধরে খাওয়াতে হবে এবং উত্তম যত্ন নিতে হবে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, সর্বক্ষণ লক্ষ্য রাখতে হবে তারা সুস্থ্য, সবল, তরতাজা এবং চটপটে / চঞ্চল আছে কি না। ছালার চট ৩ ঘন্টা পর পর ব্রাশ দিয়ে পরিস্কার করে দিতে হবে এবং ২ টি চট ব্যবহার করতে হবে। প্রতিবার ব্যবহারের পূর্বে রোদে শুকিয়ে জীবাণুনাশক দ্বারা স্প্রে করে ব্যবহার করতে হবে।
চার. স্বভাবতই টার্কির বাচ্চারা বেশীর ভাগ সময় ঘুমায়, তাই তাদেরকে দুই ঘন্টা পর পর জাগিয়ে দিতে হবে।
পাঁচ. বাসস্থান/ ব্রুডারে সর্বক্ষণ খেয়াল রাখতে হবে, কোন অবস্থায়ই যেন গ্যাস উৎপন্ন না হয়। যদি কোনক্রমে গ্যাস হয়ে যায়, তৎক্ষণাৎ গ্যাস বের করে দিতে হবে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, লিটারের আর্দ্রতা ১৫%-২০% এর মাঝে রাখতে হবে। লিটার যেন দলা পাকিয়ে না যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং নিয়মিত লিটার নেড়ে চেড়ে দিতে হবে। লিটার ভিজে গেলে পুরো লিটার না ফেলে নতুন এবং পুরাতন অর্থাৎ ৫০%-৫০% অনুপাতে মিশিয়ে দিতে হবে।
প্রতি সপ্তাহে ব্রুডারের ২০% লিটার ফেলে দিয়ে নতুন ২০% লিটার পুরাতন লিটারের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। লিটারের তাপমাত্রা কম হলে অবশ্যই ছালার চট বিছানা হিসেবে দিতে হবে এবং দৈনিক দুইবার পরিস্কার ও উলট-পালট করে দিতে হবে। দিনে ১ টি চট ব্যবহার করতে হবে এবং রাতে অন্য টি। প্রতিদিন রোদে শুকিয়ে টিমসেন দিয়ে স্প্রে করে ব্যবহার করতে হবে।
ছয়. ব্রুডারের তাপঃ সর্বক্ষণ খেয়াল রাখতে হবে, ব্রুডারে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে কমিয়ে দিতে হবে এবং কমে গেলে বাড়িয়ে দিতে হবে। কোন অবস্থাতেই অবহেলা করা যাবে না। রুম চেক করে তাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। অর্থাৎ তাপমাত্রা উল্লেখিত নিয়ম অনুসারে চলতে থাকবে।
সাত. দুই সপ্তাহ পর চিকগার্ডের জায়গার পরিমান চারদিকে ৪ ইঞ্চি পরিমান বাড়িয়ে দিতে হবে, ৩য় সপ্তাহে ৬ ইঞ্চি, প্রয়োজনে আরও বেশী জায়গা বাড়িয়ে দিতে হতে পারে।
এক মাস পর প্রতিটি বাচ্চাকে ১ বর্গফুট জায়গা দিয়ে ৩-৩.৫ ফুট উচ্চতার পার্টিশন দিয়ে চারদিকে ঘেরাও দিয়ে ৫০ টি বাচ্চার জন্য একটি কক্ষ করে উক্ত কক্ষের এক কোনে একটি ব্রুডার স্থাপন করে রাখতে হবে। যদি বাচ্চাদের তাপের প্রয়োজন হয় তাহলে ব্রুডারের নীচে গিয়ে তারা প্রয়োজনীয় তাপ নিবে। খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চাগুলো কক্ষের বাহিরে যেন না যেতে পারে।
আট. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ ও ভিটামিন কুসুম গরম পানিতে মিশ্রিত করে দিতে হবে।
নয়. জিরো বয়সের বাচ্চাকে ১ম দিন থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত ১ লিটার পানিতে ১০০ এম.এল. দুধ মিশ্রিত করে খাওয়াতে হবে এবং ৪ ঘন্টা পর উক্ত দুধ মিশ্রিত পানি পরিবর্তন করে পুনরায় নতুন করে দুধ মিশ্রিত পানি সরবরাহ করতে হবে। এখানে আরো উল্লেখ থাকে যে, প্রতি ১০ টি বাচ্চার জন্য একটি সিদ্ধ ডিম খাবারের সঙ্গে মিশ্রিত করে ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
দশ. প্রতি সপ্তাহে বাচ্চাগুলোর গড় ওজন নিয়ে রেজিষ্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে।
এগার. নিয়ম মাফিক প্রতিটি ভ্যাকসিন দিতে হবে এবং রেজিষ্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে।
বার. অনেক সময় বাচ্চাগুলো জড়ো হয়ে একটি আরেকটির উপর স্তুপ আকারে থাকতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং ঐ অবস্থায় বাচ্চাগুলোকে চারদিকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে কিছু সংখ্যক বাচ্চা মারাও যেতে পারে।
Image Source www.google.comআমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
No comments:
Post a Comment