Breaking

Thursday, April 26, 2012

শখের মৃৎশিল্প

প্রশ্ন: ক) মাটির শিল্প বলতে কী বুঝি?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কোনো কিছু যখন সুন্দর করে আঁকা হয়, সুন্দর করে তৈরি করা হয়, তখন তা হয়ে ওঠে শিল্প। আর শিল্পের এই কাজকে বলা হয় শিল্পকলা। বাংলাদেশে অনেক রকম শিল্পকলা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন ও অন্যতম হলো মাটির শিল্প। মাটি দিয়ে তৈরি এই শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সরাই, মটকা, পিঠা তৈরির ছাঁচ ইত্যাদি। এই শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। আর এই শিল্পের প্রধান শিল্পী হলো আমাদের কুমোর সম্প্রদায়। কুমোর সম্প্রদায়ের হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানে মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকর্মকে মাটির শিল্প বলা হয়। মাটির শিল্পের আরেক নাম হলো মৃৎশিল্প।

প্রশ্ন: খ) বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্ম কোনটি?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
শিল্প বলতে আমরা বুঝি কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকা, সুন্দর করে গাওয়া, সুন্দর করে তৈরি করা। আর শিল্পের এই কাজকে বলা হয় শিল্পকলা। আমাদের দেশে নানা শিল্পকলা রয়েছে, রয়েছে নানা ধরনের শিল্পকর্ম। এসব শিল্পকর্মের মধ্যে বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার পরিচয় পাওয়া যায় মাটির শিল্পে। এটা এ দেশের নিজস্ব শিল্প। বৈশাখী মেলায় ও নানা পার্বণে যেসব মাটির জিনিস বিক্রি হয়, সেসব কিছুই মাটির শিল্প। গ্রামের কুমোররা নিপুণভাবে এসব তৈরি করেন। প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশে মৃৎশিল্প বা মাটির শিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড় ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে যেসব পোড়ামাটির ফলক বা টেরাকোটার নিদর্শন রয়েছে, তা মাটি দিয়েই তৈরি। কাজেই বলা যায়, বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্ম হচ্ছে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প।

প্রশ্ন : গ) শখের হাঁড়ি কী রকম?
উত্তর : প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলার মৃৎশিল্পে শিল্পকর্মের অনন্য নিদর্শন শখের হাঁড়ি। গ্রামবাংলার কুমোররা নিপুণ দক্ষতায় বৈচিত্র্যময় কারুকাজের সাহায্যে এই হাঁড়ি তৈরি করে। কুমোরদের যত্ন ও পরম মমতায় তৈরি এই হাঁড়ির গায়ে রঙ-বেরঙের নকশা করা হয়। এসব নকশা খুব সহজেই শৌখিন মানুষের মনকে আকৃষ্ট করে। সুন্দর করে বাড়িতে সাজিয়ে রাখা হয় এই শখের হাঁড়ি। আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠান-পার্বণে এই হাঁড়ি বিভিন্ন শৌখিন কাজে ব্যবহার করা হয়। শখ করে পছন্দের জিনিসও এই সুন্দর হাঁড়িতে রাখা হয়। তাই এর নাম শখের হাঁড়ি।

প্রশ্ন: ঘ) বৈশাখী মেলায় কী কী পাওয়া যায়?
উত্তর : প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বৈশাখী মেলা বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। শফিউল আলম রচিত ‘শখের মৃৎশিল্প’ রচনাটিতে বৈশাখী মেলায় পাওয়া যায় এমন নানান শৌখিন জিনিসের বর্ণনা রয়েছে।
বৈশাখী মেলায় বাংলার আপামর জনগণ আনন্দ-উত্সব করে থাকে। এ মেলায় নানা ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। মেলা থেকে মানুষ জিনিসপত্র কেনাকাটা করে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। এখানে বাঁশের তৈরি জিনিসের মধ্যে পাওয়া যায় কুলো, ডালা, ঝুড়ি, চালুন, মাছ ধরার চাঁই, খালই এবং আরও অনেক কিছু। খাবার জিনিসের মধ্যে পাওয়া যায় বাঙ্গি, তরমুজ, মুড়ি-মুড়কি, জিলাপি, বাতাসা ইত্যাদি। মাটির তৈরি জিনিসের মধ্যে পাওয়া যায় বিচিত্র বর্ণের ফুল, পাতা ও মাছের ছবি আঁকা সব হাঁড়ি। মাটির ঘোড়া, হাতি, ষাঁড়, নানা আকারের পুতুল, মাটির মাছ, কলস, সরা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠে তৈরির নানা ছাঁচ ইত্যাদি বাঁশ ও মাটির তৈরি এ জিনিসগুলো।

প্রশ্ন: ঙ) মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান কী?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মৃৎশিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপাদান হলো মাটি। তবে সব মাটি দিয়ে এ কাজ হয় না। দোঁআশ মাটি তেমন আঠালো নয়, আর বেলে মাটি ঝরঝরে, তাই এগুলো দিয়ে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প হয় না। মৃৎশিল্পের জন্য দরকার পরিষ্কার এঁটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো। আবার এঁটেল মাটি হলেই যে তা দিয়ে শিল্পের কাজ করা যাবে তাও নয়। এর জন্য দরকার অনেক যত্ন আর শ্রম। দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। প্রয়োজন কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। মৃৎশিল্পের প্রধান উপাদান মাটি হলেও এর সঙ্গে দরকার একটা কাঠের চাকা। এই চাকায় নরম মাটির তাল লাগিয়ে নানা আকারের মাটির পাত্র ও নানা জিনিস তৈরি করে কুমোরেরা।

প্রশ্ন: চ) কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম লেখ।
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। মৃৎশিল্প আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প। এ দেশের কুমোর সম্প্রদায় যুগযুগ ধরে তৈরি করে আসছে নানা রঙের, নানা বর্ণের বিভিন্ন রকমের মাটির তৈরি জিনিসপত্র। আমাদের দেশের কুমোরদের তৈরি কয়েকটি মৃৎশিল্পের নাম হলো: মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, মটকা, বাসন-কোসন, পেয়ালা, সুরাই, জালা, পিঠা তৈরির ছাঁচ, পুতুল ও নানা রকম পশু-পাখি, মাছ ইত্যাদি। এ ছাড়াও আমাদের দেশে এক সময় গড়ে উঠেছিল অনিন্দ্যসুন্দর মৃৎশিল্প টেরাকোটা। বাংলার অনেক পুরনো মৃৎশিল্প এই টেরাকোটা।

প্রশ্ন: ছ) টেরাকোটা কী?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে আমাদের এই বাংলাদেশে মৃৎশিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। প্রাচীন মৃৎশিল্পের মধ্যে অন্যতম হলো টেরাকোটা। টেরাকোটা একটি ল্যাটিন শব্দ। ‘টেরা’ অর্থ মাটি আর কোটা অর্থ পোড়ানো।
পোড়ামাটির তৈরি মানুষের ব্যবহারের সব রকমের জিনিস টেরাকোটা হিসেবে পরিচিত। নকশা করা মাটির ফলক বা জিনিস ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো টেরাকোটা।

প্রশ্ন: জ) বাংলাদেশের কোথায় পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। হাঁড়ি-কলসি ছাড়াও আমাদের দেশে এক সময় গড়ে উঠেছিল সুন্দর পোড়া মাটির ফলকের কাজ। এর অন্য নাম টেরাকোটা। নকশা করা মাটির ফলক ইটের মতো পুড়িয়ে তৈরি করা হতো এই শিল্প। বাংলাদেশের ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর বৌদ্ধ স্তূপ, দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির ও বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প দেখতে পাওয়া যায়। সম্প্রতি নরসিংদির ওয়ারী বটেশ্বরে মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছে নানা ধরনের সুন্দর মাটির পাত্র আর ফলক।

প্রশ্ন: ঝ) মটির শিল্প আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয় কেন?
উত্তর: প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশে রয়েছে মৃৎশিল্পের প্রচলন। 'শখের মৃৎশিল্প' রচনায় এদেশের মৃৎশিল্পের পরিচয় চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার পরিচয় পওয়া যায় মাটির শিল্পে। এটা এ দেশের নিজস্ব শিল্প। হাজার হাজার বছর ধরে এদেশের মাটির শিল্পের চর্চা হয়ে আসছে। এদেশের মানুষের মন যে শিন্পীর মন, এই মাটির শিল্প তারই পরিচয় বহন করে। ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থান গড়, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে দেখা যায় পোড়ামটির ফলকের নিদর্শন তাই মাটির শিল্প আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরবের বিষয়।

প্রশ্ন: 'শখের মৃৎশিল্প' প্রবন্ধেরমূলভাব লিখ।
মূলভাব: মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে বলা হয় মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প। বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার পরিচয় পাওয়া যায় এই মাটির শিল্পে। মৃৎশিল্প আমাদের এ দেশের নিজস্ব শিল্প। তোমরা নিশ্চয় বৈশাখী মেলায় কিংবা নানা পার্বণে বিভিন্ন মেলায় মাটির তৈরি নানা রকম পুতুল, নকশা করা হাঁড়ি, মাটির ফল, তৈজসপত্র বিক্রি হতে দেখেছ। মাটির তৈরি এসব জিনিসই মৃৎশিল্প। গ্রামের কুমোররা নিপুণভাবে এসব তৈরি করেন। প্রাচীনকাল থেকে এ দেশে মৃৎশিল্পের চর্চা হচ্ছে। ময়নামতির শালবন বিহার, বগুড়ার মহাস্থানগড়, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে দেখা যায় পোড়ামাটির ফলক। পোড়ামাটির এসব ফলককে বলা হয় টেরাকোটা। মাটির শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্য।

1 comment:

  1. It's actually a great and helpful piece of information. I'm happy that you just shared this useful information with us.
    Please stay us up to date like this. Thank
    you for sharing.

    ReplyDelete

Clicky