Breaking

Thursday, April 26, 2012

দুখু আর সুখু

প্রশ্ন (ক): চাষির কয় মেয়ে? তাদের কার কী নাম এবং কার কেমন স্বভাব?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু।
চাষির দুই মেয়ে। এই দুই মেয়ের নাম দুটিও ভারি সুন্দর। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। নামের মতোই দুই মেয়ের স্বভাবে রয়েছে ভিন্নতা। বড় মেয়ে দুখু হলো শান্ত আর কাজে পটু। অন্যদিকে ছোট মেয়ে সুখু বদমেজাজি আর আলসে। বলা যায়, আচার-আচরণে দুখু আর সুখু সম্পূর্ণ বিপরীত।

প্রশ্ন (খ): দুখুর তুলো উড়ে গেল কীভাবে?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। দুখু কখনও অলস বসে থাকত না। সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য সে চরকায় সুতো কাটত। একদিন দুখু উঠানে বসে চরকায় সুতো কাটছিল। এমন সময় হঠাৎ জোরে বাতাস বইতে শুরু করল। এ জোর বাতাসে দুখুর তুলো উড়ে গেল।

প্রশ্ন (গ): তুলোর পিছু ছুটতে ছুটতে কার সঙ্গে দুখুর প্রথম দেখা হলো এবং কী ঘটল?
উত্তর: ‘দুখু আর সুখু’ গল্পটি বাংলাদেশের চিরায়ত লোক-কাহিনীর একটি অন্যতম গল্প। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে চাষির বড় মেয়ে দুখুর একটি অভিযানের চমত্কার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
কাজে পটু শান্ত স্বভাবের দুখু একদিন উঠানে বসে চরকায় সুতো কাটছিল। এমন সময় হঠাৎ জোর বাতাস উঠল। বাতাস দুখুর তুলো উড়িয়ে নিয়ে গেল। দুখু পিছু পিছু ছুটল।
তুলোর পিছু ছুটতে ছুটতে দুখুর সঙ্গে প্রথম দেখা হলো এক গাইয়ের সঙ্গে। সেখানে ঘটল এক মজার ঘটনা। গাই দুখুকে তার য়ালটা পরিষ্কার করে দিতে বলল। দুখু কুয়ো থেকে পানি এনে ঝাঁটা দিয়ে ধুয়ে গোয়ালটা তকতকে করে পরিষ্কার করে দিল। দুখুর কাজে গাই খুব খুশি হলো।

প্রশ্ন (ঘ): কলাগাছের সঙ্গে দুখুর দেখা হওয়ার পর কী ঘটল?
উত্তর: ‘দুখু আর সুখু’ গল্পটি বাংলাদেশের লোক-কাহিনী থেকে সংগৃহীত। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষির দুই মেয়ে দুখু আর সুখুর জীবনে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
চাষির বড় মেয়ের নাম দুখু। একদিন দুখু উঠানে বসে চরকায় সুতো কাটছিল। এমন সময় বাতাস এসে তার সবগুলো তুলো উড়িয়ে নিয়ে গেল। দুখুও তুলোর পিছু পিছু ছুটতে লাগল। তুলোর পিছু পিছু ছুটতে ছুটতে দুখুর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল এক গাইয়ের সঙ্গে, তারপর দেখা হলো কলাগাছের সঙ্গে।
কলাগাছ দুখুকে ডেকে বলল, আগাছা আর লতাপাতা তাকে জাপটে ধরেছে। সে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে। আগাছা আর লতাপাতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কলাগাছ দুখুর সাহায্য চাইলে সে কলাগাছকে সাহায্য করল। দুখু কলাগাছের লতাপাতা, আগাছা সরিয়ে দিল। কলাগাছ হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।

প্রশ্ন (ঙ): ঘোড়ার সঙ্গে দুখুর দেখা হওয়ার পর কী ঘটল?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। তুলোর পিছু ছুটতে ছুটতে দুখুর সঙ্গে অনেকের দেখা হয়। গাই আর কলাগাছের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর দুখুর সঙ্গে একটা ঘোড়ার দেখা হয়। ঘোড়া দুখুর গন্তব্য জানতে চায়। তারপর বলে, লাগাম আর জিনপোশ তার পিঠে কেটে বসেছে। ঘাস খাওয়ার জন্য সে নিচু হতে পারছে না। ওগুলো খুলে দেওয়ার জন্য ঘোড়া দুখুকে অনুনয় করলে দুখু তখনই ঘোড়ার লাগাম আর জিনপোশ খুলে দেয়। ঘোড়া খুব খুশি হয় ও বলে, দুখুর এ উপকারের কথা তার মনে থাকবে।

প্রশ্ন (চ): প্রাসাদের কাছাকাছি এসে বাতাস দুখুকে কী বলল?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। বাতাসে উড়িয়ে নেওয়া তুলো ফিরে পাওয়ার আশায় দুখু বাতাসের পেছন পেছন চলছিল। চলতে চলতে ওরা এক প্রাসাদের কাছে এসে থামল। প্রাসাদের কাছাকাছি এসে বাতাস দুখুকে বলল, ওই প্রাসাদে চাঁদের মা বুড়ি থাকে। ওর কাছে গিয়ে তুলো চাওয়ার জন্য বাতাস দুখুকে বলে। বাতাস দুখুকে আরও বলে, চাঁদের মা বুড়ির কাছে দুখু যত তুলো চাইবে চাঁদের মা বুড়ি তাকে তত তুলো দেবে।

প্রশ্ন (ছ): ফেরার পথে দুখু কার কার কাছ থেকে কী কী উপহার পেয়েছিল?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। চাঁদের মা বুড়িকে সালাম ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুখু অনেকের কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছিল। ফেরার পথে একে একে ঘোড়া, কলাগাছ ও গাইয়ের সঙ্গে দুখুর আবার দেখা হলো। ঘোড়ার কাছ থেকে সে একটা পক্ষীরাজের ছানা উপহার পেয়েছিল। কলাগাছ উপহার দিয়েছিল সোনার বরণ একছড়া কলা ও সেই সঙ্গে এক ঘড়া মোহর। আর গাইয়ের কাছ থেকে উপহার পেয়েছিল কপিলা গাইয়ের বকনা, যার বাঁটে কখনো দুধ শুকোয় না।
সবাইকে ধন্যি ধন্যি করে দুখু পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চেপে বাড়ি ফিরল।

প্রশ্ন (জ): দুখু বাড়ি ফিরে কী করল?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। তুলোর পেছনে ছুটতে ছুটতে দুখু বাতাসের সঙ্গে চাঁদের বুড়ির প্রাসাদে পৌঁছে গিয়েছিল। চাঁদের মা বুড়ির কাছ থেকে সে পেয়েছিল বেনারসি কাপড় আর সোনা-হীরে-মুক্তোর গহনা। চাঁদের মা বুড়ির কাছ থেকে ফেরার পথে ঘোড়া, কলাগাছ আর গাইয়ের কাছ থেকেও পেয়েছিল অনেক উপহার।
দুখু বাড়ি ফিরে অর্ধেক গহনা তার বোন সুখুকে দিয়ে দিল। দুখুর অন্তর ভালো, তাই সে সব গহনা নিজে না নিয়ে বোনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে তৃপ্তি পেতে চেয়েছিল।


প্রশ্ন (ঝ): সুখু গয়না না নিয়ে কী জানতে চাইল?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। ‘দুখু আর সুখু’ গল্পে চাষির দুই মেয়ের স্বভাব ছিল দুই রকম। বড় মেয়ে দুখু ছিল শান্ত স্বভাবের। ছোট মেয়ে সুখু ছিল বদমেজাজি আর আলসে। শান্ত দুখু চাঁদের মা বুড়ির কাছ থেকে পাওয়া গয়নার অর্ধেক ছোট বোন সুখুকে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সুখুর বড় দেমাগ। সে দুখুর কাছ থেকে একটা গয়নাও নিল না। গয়না না নিয়ে সুখু উল্টো দুখুর কাছে জানতে চাইল, সে কীভাবে এগুলো পেল। দুখু সরল মেয়ে। সে চাঁদের মা বুড়ির কাছ থেকে গয়না পাওয়ার ঘটনা সুখুকে খুলে বলল।

প্রশ্ন (ঞ): কিছুক্ষণ সুতা কাটার পর সুখু কী ভেবে সুতো কাটা বন্ধ করে দিল?
উত্তর : বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। দুখুর কাছ থেকে গয়না লাভের কাহিনী শুনে সুখু মনে মনে ভাবল দুখুর চেয়েও বেশি গয়না সে চাঁদের মা বুড়ির কাছ থেকে আদায় করে ছাড়বে। ভোর না হতেই সে চরকায় সুতা কাটতে বসল। কিছুক্ষণ সুতা কেটে দেখল জোরালো বাতাস বইছে না। সুখু ভাবল, খামাখা বসে বসে সুতা কেটে লাভ কী। যখন জোর বাতাস বইতে শুরু করবে তখন সুতা কাটলেই হলো। এই ভেবে সে সুতা কাটা বন্ধ করে দিল।

প্রশ্ন (ট): সুখুর মেজাজ কেন তিরিক্ষি হলো?
উত্তর : বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। সুখু ছিল খুব অলস ও অহংকারি। বাতাসের পিছু ছুটতে ছুটতে সে প্রাসাদের দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু প্রাসাদ ছিল অনেক দূরে। আলসে সুখু অল্পতেই হাঁফিয়ে উঠল। ফলে তার মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে উঠল।

প্রশ্ন (ঠ): সুখু বুড়ির দরজা কিভাবে খুলল? সে চেঁচিয়ে বুড়িকে কী বলেছিল?
উত্তর : বাংলাদেশের লোক-কাহিনীর একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’ ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। চাঁদের মা বুড়ির প্রাসাদ দূরে হওয়ায় সুখুর মেজাজ তিরিক্ষি হয়েছিল। সে প্রাসাদে ঢুকল রাগে আগুন হয়ে। বুড়ির দরজাটা সে খুলল লাথি দিয়ে। এরপর চেঁচিয়ে বলল : 'মুড়ামুখো বুড়ি, জলদি আমার গয়নার ব্যবস্থা কর।'

প্রশ্ন (ড): গল্পটি পড়ে তোমরা কী শিখলে?
উত্তর : 'দুখু আর সুখু' একটি শিক্ষণীয় গল্প। দুখু ও সুখুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং আচার-আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। দুখু ছিল শান্ত-শিষ্ট, ভদ্র-বিনয়ী ও কাজে পটু। সে পরোপকারীও বটে। ফলে সে তার উপযুক্ত পুরস্কার পেয়েছিল। অন্যদিকে সুখু অহংকারি, বদমেজাজি ও আলসে। ফলে সে তার খারাপ কাজের জন্য শাস্তি পেয়েছিল। এ ছাড়া সে লোভীও ছিল। অতিরিক্ত লোভের কারণেই সে সর্বস্ব হারিয়েছিল। তাই আমাদের ভদ্র ও শান্ত হতে হবে। আমরা কখনো অভদ্র হব না, বদমেজাজি হব না, আর কখনোই লোভ করব না। কারণ লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।

No comments:

Post a Comment

Clicky