Breaking

Sunday, May 12, 2019

মায়েদের ঘুমের ঘাটতি এবং এর সমাধান

এই পৃথিবীতে মা হওয়ার চেয়ে কঠিন কাজ আর কিছুই নেই মনে হয় । একজন মা-ই এর মর্ম বোঝে । মা হওয়ার পর একজন নারীকে অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয় । তার মধ্যে সর্বপ্রথম হল আরাম-আয়েশ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের ঘুম । নবজাতক শিশুদের এমনিতে-ই অনেক ধরণের সমস্যা হয়ে থাকে নতুন সব ধরণের জিনিসের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে । এমন সময় তারা মাকেই সবসময় কাছে পেতে চায় । তাই শত ক্লান্তি সত্ত্বেও মায়েদের কষ্ট করে রাত জেগে থাকে  যাতে নিজের ফুটফুটে নবজাতক সন্তানটির কোন কষ্ট না হয় ।


প্রত্যেক মানুষের জন্যে ঘুমের প্রয়োজনীয়তাঃ
একজন মানুষের সুস্বাস্থ্যর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ঘুম । একেক মানুষের ঘুম পূর্ণ এর পরিমাণ একেক ধরণের । সাধারণত প্রত্যেকটি মানুষের ঘুম এর পরিমাণ দিনে ৬-৭ ঘণ্টা হওয়া উচিৎ। ভাল ঘুম মানসিক দূশ্চিন্তা দূর করে। পরিপূর্ণ ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে । রাতে ভাল ঘুম আমাদের জীবনে নতুন জিনিসগুলির সাথে দ্রুত সামঞ্জস্য  করে থাকে । এছাড়াও বিপাক ক্রিয়া, হজম প্রক্রিয়া ইত্যাদি ভাল রেখে শরীরকে রাখে সুস্থ ।  গবেষণায় দেখা গেছে যে রাতের ঘুমই আমাদের ব্রেইনকে সতেজ রাখতে রাতের ঘুমই সবচেয়ে কাজ করে থাকে।

নবজাতকের ঘুমের সময় বুঝতে পারা
 শিশুরা জন্মের পর পর প্রচুর ঘুমায়। তারা অন্তত দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে । কিন্তু একবারে তারা ১৬-১৮ ঘন্টার ঘুম ঘুমায় না । সারাদিনে  তারা এই ঘুম নিয়ে থাকে । কোন কোন  শিশুরা টানা ২-৩ ঘণ্টা ঘুমায় । আবার কোন কোন  শিশু ৩০ মিনিট ঘুমিয়ে উঠে যায়। যার কারণে মায়ের জন্যে অসুবিধা হয়ে পরে কেননা এইভাবে সারাক্ষণ বাচ্চাকে দেখতে গিয়ে ঘরের কোন কাজ তো হয়-ই না বরং তাদের ঘুম পূর্ণ হয় না ।

নবজাতকদের ঘুম খুবই অনিশ্চিত একটা জিনিস । নবজাতকদর জন্মের পর পর যখনই ঘুম পায় তখনই তারা ঘুমায় । এর কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই । মুলত তাদের ঘুম ২ টি  পর্যায়ক্রমে ভাগ করা যেতে পারে, ১/ হালকা ঘুম এবং ২/ গাঢ় ঘুম। হালকা ঘুমকে র‍্যাপিড আই মুভমেন্টও (REM) বলা হয়, এ সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে এবং খুব তাড়াতাড়িই এই ঘুম ভেঙ্গে যায় ।


বাচ্চাদের ঘুম হল REM পর্যায়ের ঘুম । এজন্য তাদের ঘুম খুব তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে যায় । কিছু কিছু শিশুদের এই পর্যায় কয়েক মাস গেলেই কেটে যায়, আবার কিছু কিছু শিশুদের তা কাটে না । যার ফলে মায়েদের দীর্ঘদিন যাবত টানা কষ্ট করে যেতে হয় ।

তবে নিচের নিয়মগুলো মেনে চললে মায়েদের একটু হলেও কষ্ট কমবে।
১. শিশু ঘুমানোর সাথে সাথে কিছুক্ষণের জন্যে হলেও আপনিও তার সাথে ঘুমিয়ে নিন । আপনার মনে আসতে পারে এতো অল্প সময় ঘুমিয়ে কি করবো ? কিন্তু সারাদিন  না ঘুমানোর থেকে কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নেয়া মনে হয় অনেক ভাল ।

২. পরিবারের অন্যান্য সদস্য  কিংবা আপনার স্বামীর সাহায্যে পালা বদলের মাধ্যমে শিশুকে দেখা শুনা করতে পারেন ।

৩. অতিরিক্ত চিন্তা একেবারেই করবেন না । মা হওয়া কঠিন কাজ তা ঠিক আছে কিন্তু এটি অসম্ভব কিছেই নয় । মনের মধ্যে এই সবসময় এই বিশ্বাসটা রাখুন যে এই কঠিন সময় খুব তাড়াতাড়ি-ই পার করতে পারবেন ।

৪. বাচ্চাকে কোলে না নিয়ে, শুইয়ে শুইয়ে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। তাহলে প্রতিবার আপনাকে কষ্ট করে উঠতে হবে না বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য  কষ্ট করে উঠতে হবে না ।

৫. বাচ্চাকে আপনার কাছে নিয়ে ঘুমান । যাতে সে উঠার সাথে আপনি সহজেই তাকে কোলে নিতে পারেন ।

৬. বাচ্চা হওয়ার পর পর অনেক মাকেই বিমর্ষ হয়ে পরতে দেখা যায় । ভুলে যাবেন না আপনিও ১জন স্বাভাবিক মানুষ । আপনার ইচ্ছাগুলিকে বাচ্চা হওয়ার পর পর ভুলে যাওয়ার কিছু নেয় । দিনে অন্তত ১০-২০ মিনিটের জন্যে হলেও নিজের জন্য কিছু সময় রেখে দিন । সে সময়ে আপনি শুধু আপনার পছন্দনীয় কাজগুলিই করবেন ।
৭. প্রতিদিন ইয়োগা বা মেডিটেশন করুন । এটি আপনাকে স্নায়ুবিক চাপ থেকেও  রক্ষা করবে।

৮. অধিকাংশ মানুষ রাতে ঘুমানোর আগে আমরা সবাই ফোন বা ল্যাপটপ চালাতে পছন্দ করি । এটি আমাদের অনেক মুল্যবান ঘুম কেড়ে নেয় । ফোন বা ল্যাপটপে সময় নষ্ট না করে সেই সময়টা ঘুমিয়ে নিলে তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি ।গ্যাজেট এর ব্যবহার কমিয়ে দিন।

আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source: www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky