Breaking

Tuesday, April 30, 2019

বৈশাখে-গ্রীষ্মে ত্বকের যত্ন ও পরিচর্যা - ভাল থাকুক আপনার ত্বক

গ্রীষ্মকাল। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য। ভ্যাপসা গরম। আর গত কয়েক দিনের অসহ্য গরমতো জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে শরীরে। আর ক'দিন এভাবে গরম থাকবে বলাও যাচ্ছে না। বৈশাখের এই অতিরিক্ত গরমে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত, হারাচ্ছে স্বাভাবিক আর্দ্রতা। গরমের এই সময়ে প্রচন্ড রোদ ও ধুলোবালির কারণে ত্বকে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। তাই আমাদের মুল্যবান-কোমল ত্বকের যত্নে সচেতন হওয়া জরুরি অনেকখানি। আবহাওয়ার ধরনের ওপর নির্ভর করেই আমাদের ত্বকের যত্ন ও পরিচর্যা করতে হবে। গরমের সময়ে এক রকম আর শীতকালীন পরিচর্যা শীতকালীন সময়ে উপর।


জন্মগতভাবে আমাদের ত্বক সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে। 
১। স্বাভাবিক ত্বক
২। শুষ্ক ত্বক
৩। তৈলাক্ত ত্বক
রোদ ও ধূলাবালি স্নিগ্ধ ও সতেজ সাভাবিক ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু। এই গ্রীষ্মে রোদের তীব্রতা আর বাহিরের ধুলাবালু লোমকূপের গোড়ায় জমে মুখে ব্রণ হতে পারে এবং রোদের ছোপ ছোপ দাগ পড়ে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বক শুষ্ক হলে ধীরে ধীরে ত্বকের নমণীয়তা কমে যায়, আর এভাবেই ত্বকে ফাটল ধরে এবং আস্তে আস্তে মলিন হয়ে বার্ধক্যের ছাপ ফুটে উঠে চেহারায়। তৈলাক্ত ত্বকে রোদের কারণে অতিরিক্ত ঘাম বের হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতির কারনতো বটেই, জ্বর-ঠান্ডা লেগে যেতে পারে সহসাই।

বৈশাখে-গ্রীষ্মে ত্বকের যত্ন-পরিচর্যা ও কিছু টিপস্

ত্বকের যত্নে ফেসওয়াশ
গরমের দিনে ত্বকের পরিচ্ছন্নতায় ব্যবহার করতে পারেন গ্লিসারিন-সমৃদ্ধ সাবান অথবা ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ। তবে গরমে সবচেয়ে ভালো হয় ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার ব্যবহার করলে । যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের এই গরমকালে কষ্ট হয়  সবচাইতে বেশি। তেলগ্রন্থিগুলো এ সময় সক্রিয় হয়ে উঠার কারণে তেল বের হয় বেশি, তারা মেডিকেটেড ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করলে ভালো ফল পেতে পারেন।

রোদ থেকে সুরক্ষা পেতে সানস্ক্রিন
গরমের সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে সানস্ক্রিন। সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করে আমরা রোদে পোড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারি, বিশেষ করে চোখের নিচের নমনীয় ত্বকের জন্য মেডিকেটেড সানস্ক্রিন এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তেলবিহীন সানস্ক্রিনই ব্যবহার করতে হবে। আপনি চাইলে ওয়াটার প্রুফ সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন। সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তা যেন সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর (এসপিএফ) অন্তত ১৫ হয়।  

ক্রিম বা বেবি লোশন
ত্বকে রুক্ষতা আর বয়সের ছাপ না চাইলে, এই গ্রীষ্মে শুষ্ক ত্বকের খসখসে ভাব দূর করার জন্য এবং বলিরেখা পড়ার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সবসময় ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য ক্রিমের বদলে বেবি লোশনও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে গরমের দিনে ক্রিম হতে হবে তেলবিহীন। নতুবা ক্রিমের অতিরিক্ত তেল গরমে আরো বেশি সমস্যা তৈরি করবে।



ত্বকের যত্ন নিয়ে আরো কিছু জরুরি পরামর্শ
>> গরমে ঘামাচির সমস্যা থাকলে নিমপাতার রস লাগাতে পারেন। তেঁতো খাবার বিশেষ করে করলা বেশি বেশি খান।  ট্যালকম পাউডারের সাথে এক চিমটি খাবার সোডাও ব্যবহার করতে পারেন।

>> তৈলাক্ত ত্বক ও মুখের তেলতেলে ভাব কাটাতে বার বার মুখ পরিষ্কার করতে হবে। শশা বাটা এবং মুশুরি ডাল বাটা দুটো পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।

>> লাউয়ের রস, তরমুজের জুস বরফ করে মুখে ঘষুন। এতে রোদে পোড়া ভাব দূর হয়ে সাথে সাথে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল মোলায়েম।

>> পরিমাণমতো শশার রস, আধা চা চামচ লেবুর রস, আধা চামচ গোলাপ জল একসাথে মিশিয়ে লোশনের মতো মুখে লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রাখুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। গরমে তৈলাক্ত ত্বকের বিড়ম্বনা থেকে অনেকখানিই মুক্তি পাবেন।  সপ্তাহে অন্তত ৪/৫ দিন করুন, ভালো থাকবেন।

>> গরমে অনেকেরই ব্রনের মাত্রা বেড়ে যায়। ব্রন এড়াতে সপ্তাহে ৩/৪ বার চিরতার পানি এবং ২/৩ টি কাঁচা হলুদ ও আখের গুঁড় খেতে পারেন। সব সময় মুখ পরিষ্কার রাখবেন। নিমপাতা, কাঁচা হলুদ, চিরতা ও মুলতানি মাটি একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।

>> টমেটোর রস, কাঁচা হলুদের রস, ভুসিওয়ালা আটা মিশিয়ে মুখ, গলা ও ঘাড়ে লাগান। ত্বকের ছোপ ছোপ দাগ দূর করার জন্য বেশ কার্যকরী । মাঝে মাঝে গোলাপজল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। কাঁচা দুধ, লেবুর রস, পাকা পেঁপে, চন্দন, গোলাপের পাপড়ি একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে নিয়ে পুরো ত্বকে লাগান, হালকা ম্যাসাজ করুন। ভালো ফল পাবেন।

পরিশেষে, ত্বকের যত্নে প্রসাধনীর চেয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টির দিকে নজর দিন, যা ছড়ানো আছে প্রকৃতি-প্রদত্ত খাদ্য উপাদান আর ফলমূলে। মনে রাখবেন ফর্সা ত্বক মানেই সুন্দর ত্বক নয়, সুস্থ ত্বক মানেই সুন্দর ত্বক।

আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source www.google.com

No comments:

Post a Comment

Clicky