Thursday, April 26, 2012

অধ্যায় ১ - (এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড)

প্রশ্নঃ (ক) তোমার এলাকার পাঁচটি/কতিপয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নাম লেখ ?
উত্তরঃ আমাদের বসবাসের এলাকাটি তেমন উন্নত নয়। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো সেখানে ভাল অবস্থায় নেই। ফলে আমাদের অনেক অসুবিধা হয়। তাই এলাকার উন্নয়নের জন্য নিম্নলিখিত পাঁচটি/কিছু অতি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের নাম উল্লেখ করা হলোঃ
১. রাস্তাঘাট, পুল, সাঁকো, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণ।
২. ধর্মীয় স্থান, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সম্পদ সংরক্ষণ।
৩. গাছ লাগানো, পরিচর্যা এবং সামাজিক বনায়ন।
৪. এলাকার পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখা।
৫. ঝোঁপঝাড়, পুকুরের কচুরিপানা ও ড্রেন পরিষ্কার করে মশা নিধনের ব্যবস্থা করা ।
৬. নিরাপদ পানি পান সম্পর্কে সকলকে সচেতন করা।
৭. খাল খননের ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশন ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা ।
৮. এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করা এবং নিরক্ষরতা দুরীকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা।
৯. এলাকার লোকজনকে আত্ননির্ভরশীল হতে সাহায্য করা। বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা ইত্যাদি।
কারো একার পক্ষে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। এলাকার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজন ছোট-বড় সকলের অংশগ্রহণ।

প্রশ্নঃ (খ) এলাকায় রাস্তাঘাট ভালো না হলে কী অসুবিধা হতে পারে ?
উত্তরঃ আমরা কেউ সারাদিন নিজ গৃহে অবস্থান করি না। নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। এ কাজে আমরা রাস্তা, সাঁকো, সেতু ইত্যাদি ব্যবহার করি। এগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক না থাকলে অথবা ভালো না হলে যাতায়াতে কষ্ট হয়। আমাদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। মালামাল পরিবহনে অসুবিধা হয়। ব্যবসা বাণিজ্যের অসুবিধা হয়।

প্রশ্নঃ (গ) এলাকায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা উচিত কেন ?
উত্তরঃ সুন্দর, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সুন্দর পরিবেশ প্রয়োজন। পরিবেশের অন্যতম উপাদান হচ্ছে গাছ। গাছপালা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের শ্বাস-প্রশাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আমরা বৃক্ষ থেকে পেয়ে থাকি। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদি বৃক্ষ হতে আসে। অনেক প্রয়োজনীয় ওষুধ বৃক্ষ থেকে পাওয়া যায়। বৃক্ষ মাটির ক্ষয়রোধ করে। প্রচণ্ড গরমে গাছের ছায়ায় আমরা একটু শীতল পরশ পাই। এসব কারণে আমাদের বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা উচিত।

প্রশ্নঃ (ঘ) এলাকাবাসীকে নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতন করা প্রয়োজন কেন ?
উত্তরঃ পানির অপর নাম জীবন। আমাদের দেশে নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর ইত্যাদিতে পানির অভাব নেই। কিন্তু রয়েছে নিরাপদ পানির অভাব। যে পানি পান বা ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় না তাকে আমরা নিরাপদ পানি বা বিশুদ্ধ পানি বলতে পারি। এলাকার লোকজনের স্বাস্থ্যকে নিরাপদ রাখতে হলে নিরাপদ পানি পান ও ব্যবহার করতে হবে। এ ব্যাপারে এলাকার সকলকে সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব। পানি ফুটিয়ে পান করলে তা জীবনের জন্য নিরাপদ। তাই এলাকার সকলকে প্রয়োজনবোধে পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দেব। গভীর নলকূপের পানিও নিরাপদ।

প্রশ্নঃ (ঙ) এলাকার উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলের দায়িত্ব কী ?
উত্তরঃ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার লোক বসবাস করে। আবার প্রতিটি এলাকাতেই জীবন ধারনের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান তৈরি বা উৎপাদিত হয় না। ফল ও শাকসবজি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন। এগুলো উৎপাদনের মাধ্যমে এলাকার দরিদ্র লোকজনকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা যায়। এছাড়া ফল ও শাকসবজির চাষ এলাকার লোকজনের খাদ্য ও পুষ্টির যোগান দিতে পারে। সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে এবং অন্যান্য বেসরকারী সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং চারা ও বীজ সরবরাহ করা হয়। এলাকায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড আয়োজনের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে স্বাস্থ্য সচেতন ও স্বনির্ভর হতে আমরা সাহায্য করতে পারি।

প্রশ্নঃ (চ) তোমার এলাকায় কিছু লোকের হাত ও পায়ের তালুতে চর্মরোগ দেখা যাচেছ। তোমার কী করা উচিত। সে সম্পর্কে লেখ।
উত্তরঃ আর্সেনিক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা মাটির নিচে থাকে এবং পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে। এই পানি নলকূপের মাধ্যমে উপরে উঠে আসে। আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে হাত ও পায়ের তালুতে এক ধরনের চর্মরোগ হয়- যা পরবর্তীতে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। আর্সেনিকযুক্ত পানি জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। অতএব এ ধরনের পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য এলাকার লোকজনকে সচেতন করব। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন বেসরকারী সংস্থা আর্সেনিকযুক্ত নলকূপগুলো চিহ্নিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আর্সেনিকযুক্ত নলকূপগুলো লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। আমরা লাল রং এর চিহ্ন দেওয়া নলকূপের পানি পান করা থেকে এলাকাবাসীদের বিরত থাকতে বলব।

No comments:

Post a Comment

Clicky