Breaking

Thursday, April 26, 2012

পঞ্চম শ্রেনি - বাংলা - আশ্চর্য পাথরের কথা

প্রশ্ন: ক) মানুষ কীভাবে নানা রকম রত্নপাথর আবিষ্কার করে?
উত্তর: সেকালে মানুষ নানা কাজে বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার বা হাতে বহন করা যায় এমন অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করত। এসব হাতিয়ারের মধ্যে পাথরের তৈরি হাতিয়ারই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন কাজে ওরা পাথর ব্যবহার করত। তাই পাথরের গুণাগুণ যাচাই ও পরীক্ষা করায় ছিল মানুষের অফুরান আগ্রহ। এভাবে পাথরের গুণাগুণ পরীক্ষা করার আগ্রহ থেকেই মানুষ নানা রকম রত্নপাথর আবিষ্কার করে।

প্রশ্ন: খ) কোন জায়গায় মানুষ এক ‘অদ্ভুত পাথরের’ সন্ধান পায়? পাথরটির কী গুণ ছিল?
উত্তর: আদিকালে মানুষ বিভিন্ন কাজে পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করত। তাই তারা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পাথরের সন্ধান করত। এভাবে একদা এশিয়া মহাদেশের ম্যাগনেশিয়া নামের একটা জায়গায় মানুষ এক অদ্ভুত পাথরের সন্ধান পায়। এ পাথরটির আশ্চর্য গুণ ছিল। আর এ গুণটি হলো লোহার টুকরোকে টেনে ধরার চমৎকার ক্ষমতা।

প্রশ্ন: গ) কীভাবে চুম্বক পাথর আবিষ্কৃত হয়?
উত্তর: অনেক কাল আগে এশিয়া মহাদেশের ম্যাগনেশিয়া নামের একটা জায়গায় মানুষ এক অদ্ভুত পাথরের সন্ধান পায়। আশ্চর্য তার গুণ। দেখা গেল ওই পাথরের রয়েছে লোহার টুকরোকে টেনে ধরার চমৎকার ক্ষমতা। কৌতূহলী মানুষ সেই পাথরের কাছে লোহার টুকরো নিয়ে বারবার পরখ করে দেখল। প্রত্যেকবারই দেখা গেল, অদৃশ্য কোনো এক শক্তিতে পাথর সেগুলোকে কাছে টানছে। আর সেগুলো পাথরের গায়ের সঙ্গে এসে লেপ্টে বসছে। পাথরের এ অদৃশ্য আকর্ষণ শক্তি দেখে মানুষ বিস্মিত হলো। এভাবে পাথরের দোষগুণ বিচার, যাচাই ও পরীক্ষার মাধ্যমে চুম্বক পাথর আবিষ্কৃত হয়।

প্রশ্ন: ঘ) চুম্বক পাথরের নাম ম্যাগনেটাইট রাখা হয়েছে কেন?
উত্তর: চুম্বক পাথর একটি অদ্ভুত পাথর। এর গুণও আশ্চর্য হওয়ার মতো। এই পাথরের রয়েছে লোহার টুকরোকে টেনে ধরার চমৎকার ক্ষমতা। অনেক কাল আগে এশিয়া মহাদেশের ম্যাগনেশিয়া নামের একটা জায়গায় মানুষ এই অদ্ভুত পাথরের সন্ধান পায়। ম্যাগনেশিয়া নামক জায়গায় পাওয়া গেছে বলেই সেই জায়গার নাম অনুসারে চুম্বক পাথরের নাম ম্যাগনেটাইট রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন: ঙ) ঝুলন্ত অবস্থায় চুম্বক পাথরের কোন্ বিস্ময়কর গুণ মানুষের নজরে পড়ে?
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীনকালে মানুষ পাথরের গুণাগুণ পরীক্ষা করতে গিয়ে নানা রকম রত্নপাথর আবিষ্কার করে। আবিষ্কৃত সকল পাথরের ছিল নানা ধর্ম ও গুণ। তাদের আবিষ্কৃত পাথরগুলোর মধ্যে চুম্বক পাথরের আবিষ্কার এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

ঝুলন্ত অবস্থায় চুম্বক পাথরের গুণ : চুম্বক পাথর আবিষ্কারের দীর্ঘ দিন পরে চুম্বক পাথরের আরেকটি বিস্ময়কর গুণ মানুষের নজরে পড়ে। কেউ একজন লতা কিংবা সুতো দিয়ে সরল লম্বা চুম্বক পাথর ঝুলিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় লক্ষ করে যে, ঝুলন্ত অবস্থায় পাথরটি কেবল উত্তর-দক্ষিণমুখো হয়ে থাকে।
পাথরের উত্তরমুখী প্রান্তে সরল দাগ দিয়ে সেটিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখার চেষ্টা করা হলো। কিন্তু পাথরটির উত্তরমুখী দিকটাকে কেবল উত্তরমুখী হয়ে থাকতেই দেখা গেল।
উপসংহার: চুম্বকের উল্লিখিত গুণাগুণ লক্ষ করেই আবিষ্কৃত হয় দিগ্দর্শন যন্ত্র বা কম্পাস। চুম্বক পদার্থের আশ্চর্য দিক-নির্দেশক গুণের ফলেই মহাপ্রয়োজনীয় কম্পাস আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে।

প্রশ্ন: চ) দুটো চুম্বক পাথরের প্রাপ্ত কাছাকাছি আনা হলে কী দেখা যায়?
উত্তর : ভূমিকা : চুম্বক পাথরের গুণ বা ধর্ম দেখে উৎসাহী মানুষ পাথর নিয়ে গবেষণায় মেতে ওঠে। পরবর্তীতে মানুষ চুম্বক পাথরের আরো একটি গুণ আবিষ্কার করল।
দুটো চুম্বক পাথরের প্রান্ত কাছাকাছি আনা হলে : চুম্বকের গুণ বা ধর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে এক আকর্ষণ ও বিকর্ষণ ধর্ম। অর্থ্যাৎ, একটি চুম্বক পাথরের উত্তর প্রান্তের কাছে অন্য একটি চুম্বক পাথরের উত্তর প্রান্ত আনা হলে প্রান্ত দুটো ছিটকে দূরে সরে যায়। কিন্তু একটি চুম্বক পাথরের উত্তর প্রান্তের কাছে অন্য একটি চুম্বক পাথরের দক্ষিণ প্রান্তে আনা হলে তারা একে অন্যকে আকর্ষণ করে এবং একসঙ্গে লেগে থাকে।
উপসংহার : চুম্বক পাথরের রয়েছে নানা ধরনের গুণাবলী। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চুম্বক পাথরের ধর্ম বা গুণকে নানাভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে।

প্রশ্ন: ছ) চুম্বক পাথর দিয়ে কীভাবে দিক নির্ণয় করা যায়?
উত্তর : ভূমিকা : চুম্বক পাথর আবিষ্কার মানব সভ্যতায় এক যুগান্তকারী ঘটনা। চু্ম্বক পাথর নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়ে মানুষ এর নানা ধরনের গুণাগুণ আবিষ্কার করে।
চুম্বক পাথর দিয়ে দিক নির্ণয় : চুম্বক পাথরের নানা গুণ কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে মানুষ ভাবতে থাকে। ঝুলন্ত অবস্থায় চুম্বক পাথর উত্তর-দক্ষিণমুখো হয়ে থাকে। চুম্বকের এ দিকদর্শী গুণ থেকে পরবর্তীতে চুম্বকের সাহায্যে মানুষ দিক নির্ণয় করতে শেখে। মানুষ ক্রমে অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারল যে এ পাথরকে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগানো যায় দিক নিরূপণের কাজে। চুম্বক পাথরের একটা দিক সব সময় উত্তরমুখো হয়ে থাকে। তাই উত্তর দিকে মুখ করে দাঁড়ালে সহজেই ডান হাতের দিক পূর্ব আর বাঁ হাতের দিক পশ্চিম বলে চিনে নেয়া যায়।
উপসংহার : চুম্বকের গুণ কাজে লাগিয়ে নানা ধরনের যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। চুম্বকের দিকদর্শী গুণ কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে কম্পাস বা দিগ্দর্শন যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।

প্রশ্ন: ঞ) কোন বিজ্ঞানী চুম্বক পাথর দিয়ে এক মহাপ্রয়োজনীয় যন্ত্র আবিষ্কার করেন? যন্ত্রটির নাম কী?
উত্তর : চুম্বকের একটি বিশেষ গুণ হলো ঝুলন্ত অবস্থায় চুম্বকটি উত্তর-দক্ষিণমুখী হয়ে থাকে। চুম্বকের এ গুণকের এ গুণকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানী আর্কিমিদিস এক মহাপ্রয়োজনীয় যন্ত্র আবিষ্কার করেন। আর্কিমিদিস আবিষ্কৃত দিক নির্ণয়ের যন্ত্রটির নাম কম্পাস বা দিগ্দর্শন যন্ত্র।

প্রশ্ন: আধুনিক কম্পাসে দিকনির্ণয়ের জন্য কী ব্যবহূত হয়?
উত্তর: ‘কম্পাস’ ইংরেজি শব্দ। এটি দিকনির্ণয় যন্ত্র। গভীর অরণ্যে, ধু-ধু মরুভূমিতে, অসীম মহাকাশে কিংবা অতল মহাসমুদ্রে পথ চিনে নিতে কম্পাস এখন মানুষের নির্ভরযোগ্য যন্ত্র। সাধারণত এ যন্ত্রে সুচালো শলার ওপর সরু চুম্বকপাত বসানো থাকে। চুম্বকপাতের প্রান্ত দুটি সব সময় উত্তর-দক্ষিণ দিক নির্দেশ করে। তবে আধুনিক কম্পাসে দিকনির্ণয়ের জন্য ব্যবহূত হয় বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় কাঁটা। কিন্তু কম্পাসের মূলে রয়েছে চুম্বকীয় পাথরের সেই আশ্চর্য দিকনির্দেশক গুণ।

প্রশ্ন: ট) চুম্বকের বিস্ময়কর গুণগুলো কী কী? লেখো।
উত্তর: অনেক কাল আগে এশিয়া মহাদেশের ম্যাগনেশিয়া নামক জায়গায় মানুষ এক অদ্ভুত পাথরের সন্ধান পায়। ম্যাগনেশিয়াতে এ পাথর পাওয়া গেছে বলে সে জায়গার নাম অনুসারে এই আশ্চর্য পাথরের নাম রাখা হয় ম্যাগনেটাইট বা চুম্বক। এই চুম্বক পাথরের রয়েছে অনেক বিস্ময়কর গুণ। নিচে চুম্বকের বিস্ময়কর গুণগুলো লেখা হলো।
(১) চুম্বক পাথরের রয়েছে লোহার টুকরোকে টেনে ধরার চমৎকার ক্ষমতা।
(২) ঝুলন্ত অবস্থায় চুম্বক সব সময় উত্তর-দক্ষিণমুখো হয়ে থাকে।
(৩) একটা চুম্বক পাথরের উত্তরপ্রান্তের কাছে অন্য একটা চুম্বক পাথরের উত্তরপ্রান্তে আনা হলে দেখা যায়, প্রান্ত দুটো ছিটকে দূরে সরে যায়।
(৪) একটা চুম্বক পাথরের উত্তরপ্রান্তের কাছে অন্য চুম্বক পাথরের দক্ষিণপ্রান্ত আনা হলে দেখা যায়, তারা একে অন্যকে আকর্ষণ করে এবং একসঙ্গে লেগে থাকে।
চুম্বক পাথরের আশ্চর্য দিকনির্দেশক গুণ কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস আবিষ্কার করেন কম্পাস বা দিগদর্শন যন্ত্র।

No comments:

Post a Comment

Clicky