বৃদ্ধাশ্রম, এই নামটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। রাজধানীর উত্তরার আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম । উত্তরার এ আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে দেশের নানা প্রান্তের নির্যাতিত, নিপীড়িত, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অনেকে এসে একসঙ্গে থাকছেন এবং গত শুক্রবার তাদের খোঁজে সেখানে যান চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা । ছুটির দিন, নিজের মত করে সময় কাটান তাদের সাথে। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বৃদ্ধাশ্রমে থাকা নারীদের সঙ্গে কাটান চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা । খুব কাছ থেকে শুনলেন তাঁদের দুঃখ-কষ্টের কথা, শুনে তিনি স্তব্ধ হয়ে যান।
গত ২৪/৫/২০১৯ ইং শুক্রবার ছুটির দিনে দুপুর থেকে বিকেল চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা কাটিয়েছেন রাজধানীর উত্তরার আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমটিতে । চার ঘণ্টারও বেশি সময় কাটালেন বৃদ্ধাশ্রমের নারীদের সাথে। তাদের দুঃখ-দুর্দশা তাঁর হৃদয়কে স্পর্শ করেছে । তাঁদের কাছ থেকে শোনা তাদের সেই গল্পে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা । পারছেন না কষ্টের সেসব কথা কারও সঙ্গে ভাগ করতে । এসব গল্প জমা রেখেছেন নিজের মনের মধ্যেই । পূর্ণিমা বললেন , খুব সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন তিনি ।
এর আগেও সুবিধাবঞ্চিত কিংবা সাহায্য দরকার এমন অনেকের পাশে নীরবে নানাভাবে থাকার চেষ্টা করেছেন পূর্ণিমা । এসব বিষয় নিয়ে জানাজানি হোক, তা কখনো চাননি তিনি । এবার তার সেই সিদ্ধান্তে তিনি অটল থাকতে পারলেন না। উত্তরার যে বৃদ্ধাশ্রমে গিয়েছিলেন, সেই বৃদ্ধাশ্রমে কর্তৃপক্ষের অনুরোধে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে বাধ্য হন এই চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা ।
পূর্ণিমা বলেলেন , ‘আমার সব সময় মনে হতো, জীবনের একটা সময়ে মানুষের পাশে থাকব। সেই ইচ্ছে থেকে কাউকে না প্রকাশ করেই এসব করছি। আমার বাবার মৃত্যুর পর পর আমি মাদ্রাসা কিংবা এতিমখানাগুলোতে যাই। অসুস্থ কোন রোগীদের খোঁজ পেলে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করি। এবার যে উত্তরার বৃদ্ধাশ্রমে গেলাম, কর্তৃপক্ষ চেয়েছেন আমি যেন বিষয়টি সবাইকে প্রকাশ করি । তাহলে হয়ত আমার দেখাদেখি সমাজের আরও অনেকে সামর্থ্যবান এমন উদ্যোগে সাড়া দেবেন।’
পূর্ণিমা বললেন, ‘ওখানে অনেক নির্যাতিত মেয়েদেরও দেখেছি । বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের, কেউ বা হারিয়ে গেছেন । একজন নারী এতটাই নির্যাতিত যে , তিনি এখন আর কাউকেই চিনতে পারেন না । তাঁর মুখ থেকে শুধু একটাই শব্দ—"পুলিশ, পুলিশ"।
বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসরত নারীদের গল্প শুনে স্তব্ধ হয়ে যান চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা । তিনি বললেন, ‘অনেক ধরনের কষ্টের কাহিনি শুনলাম, নির্যাতনের গল্পও শুনলাম। তা আমি বলতেও পারব না , হয়ত লিখতেও পারব না । আমার চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না । আমার ইচ্ছা আছে সময় পেলে আরও বেশি করে যাওয়ার। তাঁদের পাশে থেকে তাঁদের সান্তনা দেওয়ার ।’
বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধ নারী, নির্যাতিত মেয়েদের পাশাপাশি আছেন কিছুসংখ্যক প্রতিবন্ধীও। পূর্ণিমাকে কাছে পেয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন তারা । তাঁদের সঙ্গেও খুবই ভাল সময় কেটেছে বলে জানান পূর্ণিমা । কাউকে দেখা গেল তাঁর অভিনীত ছবির গল্প করতে। পূর্ণিমা বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের অনেকেই, আমাকে চিনতে পেরেছে । কয়েকজন আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছেন। একজন বলে উঠল, আপনার “নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি” সিনেমাটি দেখেছি । কেউ বা বলছে, তারাও নায়িকা হবে, আর তাদের নায়ক হবে শাকিব খান । আমি তাদের বললাম, আমি শাকিব খানকে জানাব।’
উত্তরার সেই বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের অনুরোধে পূর্ণিমা তাঁদেরকে কয়েকটি গানও শুনিয়েছেন । তাঁরাও পূর্ণিমাকে গান শুনিয়েছেন । একজন বললেন গান শুনাবেন-- আমি বললাম হ্যা শোনান। তিনি একটি হিন্দি গান শোনালেন। এরপর একজন আমাকে বললেন-- আসিফের গান গাইতে। তাঁদের অনুরোধে আমি তাদের “ও প্রিয়া, ও প্রিয়া, তুমি কোথায়” গেয়ে শুনালাম।’
আমাদের এই পোষ্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
Image Source: www.google.com
No comments:
Post a Comment